পালস অক্সিমিটার

পালস অক্সিমিটার, হৃৎস্পন্দন ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপার যন্ত্র। সহজে বহনযোগ্য ছোট যন্ত্রটি কতই না কাজের। আঙুলের মাথায় লাগিয়ে জানা যায় রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ। ব্যবহার করতেও নিতে হয় না বিশেষ প্রশিক্ষণ। অক্ষরজ্ঞান থাকলে সহজেই ব্যবহার করতে পারেন এই পালস অক্সিমিটার।

তো এই যন্ত্র কেন প্রয়োজন? এই যেমন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা উপসর্গ রয়েছে এমন মানুষদের জন্য পালস অক্সিমিটার হতে পারে সাহায্যকারী একটি যন্ত্র। এতে কার হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, কখন ভর্তি হতে হবে, কার অক্সিজেন থেরাপির দরকার এবং কাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র বা আইসিইউতে নিতে হবে কিংবা ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে, তা সহজেই জানা যায় পরীক্ষার মাধ্যমে।

এ ছাড়া নানা কারণে বা অসুখে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারে, হৃৎস্পন্দন খুব কম, বেশি বা অনিয়মিত হতে পারে। পালস অক্সিমিটার দিয়ে ঝটপট মেপে নেওয়া যেতে পারে হৃৎস্পন্দন ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা। সমস্যা বেশি মনে হলে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

শরীরে অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা

সাধারণত পালস অক্সিমিটারে ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ অক্সিজেন মাত্রাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। এর অর্থাৎ ৯৫ শতাংশের কম হলে চিকিৎসার ভাষায় হাইপোক্সিয়া বলা হয়। শরীরে তখন অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। তখন শ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়। সঙ্গে মাথাব্যথা, বুকব্যথা, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। স্থায়ী হাইপোক্সিয়া দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা শেষ করে দেয় এবং কোষের মৃত্যু ঘটায়। আর এ জন্যই ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে অক্সিজেন দিতে হয়। তবে কিছু কিছু দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা কম ও স্বাভাবিক ধরা হয়ে থাকে।

অক্সিমিটার সব সময় কি ঠিক মাত্রা প্রদর্শন করে

সাধারণত সব পালস অক্সিমিটারেই একই ধরনের ফল দেয়। অক্সিজেনের মাত্রা অক্সিমিটার ভেদে বা ভিন্ন ভিন্ন সময়ভেদে একই অক্সিমিটারে ফল ২ শতাংশ কম বা বেশি দেখাতে পারে, যা স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।

কোন আঙুল বেছে নেওয়া ভালো

দুই হাতের সব আঙুলের মাধ্যমেই মাপা যায়। কিন্তু বলা হয়ে থাকে, ডান হাতে কাজ করতে অভ্যস্ত মানুষ ডান মধ্যমা ও বুড়ো আঙুল এবং বাঁ হাতে বেশি কাজ করতে অভ্যস্ত মানুষের ক্ষেত্রে বাঁ হাতের মধ্যমা ও বুড়ো আঙুল ভালো ফল দেয়।

কখনো ভুল ফল দিতে পারে

হাত যদি শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে বেশি ঠান্ডা থাকে, তাহলে অক্সিমিটার সঠিকভাবে কাজ করে না। সে ক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটার ভুল ফল দিতে পারে। তাই ব্যবহারের আগে অবশ্যই এই ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে।