স্বস্তির বারান্দা

গুছিয়ে রাখলে বারান্দাই হতে পারে স্বস্তির এক জায়গা। কৃতজ্ঞতা: ফারাহ জাবীন, ছবি: খালেদ সরকার
গুছিয়ে রাখলে বারান্দাই হতে পারে স্বস্তির এক জায়গা। কৃতজ্ঞতা: ফারাহ জাবীন, ছবি: খালেদ সরকার

শুধু গাছ দিয়েই হয়তো বারান্দা সাজিয়েছেন এত দিন, একটু হয়তো বসার ব্যবস্থা। চাইলে বাড়ির বারান্দা মনের মতো করে সাজাতে পারেন। চলতি পথে কত কিছুই না পড়ে থাকতে দেখা যায় এদিক-ওদিক। যেমন গাড়ির টায়ার বা তেলের ড্রাম। কখনো ভেবে দেখেছেন, ফেলে দেওয়া এসব জিনিস ব্যবহার করেও সাজানো যায় বারান্দা?

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

বছর কয়েক আগেও লেটার বক্স ভরে থাকত প্রিয়জনদের বার্তা। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চিঠির বাক্স হারিয়ে গেছে। এই ব্যাপারটা খুব মিস করতেন ফারাহ জাবীন। বারান্দা সাজাতে গিয়ে ভাবলেন, কেমন হয় যদি দেয়ালে শোভা পায় একটি চিঠির বাক্স। ভাবনামতোই জোগাড় করলেন এবং বারান্দার দেয়ালে ঝুলিয়ে দিলেন চিঠির বাক্স।

চাকার টায়ারে বারান্দায় বসার আয়োজন, আদৌ কি সেটা সম্ভব? এমনটাই দেখা গেল ফারাহ জাবীনদের বাসার বারান্দায়। লাল, সবুজ আর নীল রঙে রাঙানো টায়ারে করা হয়েছে বসার আয়োজন। টায়ার এক মাথা থেকে আরেক মাথায় জালি বেতের সাহায্যে এই বসার ব্যবস্থা হয়েছে। এর ওপরে কুশন পেতে বসার আয়োজন করা হয়েছে। তেলের ড্রামে লাগিয়েছেন মাধবীলতা। এসবেই এই বারান্দা হয়েছে অন্য রকম।

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

কাজের প্রয়োজনে এখন অনেককেই যেতে হচ্ছে বাড়ির বাইরে। তবে যাঁরা বাসায় থাকছেন, তাঁদের কিন্তু কাজের হ্যাপা কম নয়। যেহেতু কাজ ছাড়া বাইরে বের হওয়া এখন উচিত নয়, তাই বাসার এক চিলতে বারান্দায় যেন মিলছে স্বস্তির আশ্রয়। এই সময়ে তাই বারান্দার অন্দরসাজে একটু এদিক–ওদিক বদল তো আনা যেতেই পারে। এই যেমন অনেকে বাড়িতেই তো অব্যবহৃত দেয়াল ঘড়ি থাকে, তা এই সময় ঝুলিয়ে দিতে পারেন বারান্দার দেয়ালে, দুই পাশে থাকতে পারে দুটি ঝুলন্ত পট। চাইলে দেয়ালে রাখতে পারেন হারিকেনও। যদি এসব কিছু না থাকে, তাহলে একটি বড় কুশন পেতে তাতে একটি গামছার কাপড় জড়িয়ে নিলেও বারান্দায় আসবে স্নিগ্ধ আবহ—এমনটাই বলছিলেন অন্দরসজ্জাবিদ সাবিহা কুমু। যদি বাড়িতে পুরোনো টুল বা টেবিল থাকে, নিজের হাতে তা রং করে বারান্দায় রাখতে পারেন। ছোট ছোট টিপট, ফুলদানি আর কলম–ডায়েরি সাজিয়ে রাখা টেবিলেই জমে উঠতে পারে বিকেলে চায়ের আয়োজন। একটু যদি লেখালেখি বা গান শোনার অভ্যাস থাকে, তাহলে তো আর কথাই নেই। এদিকে মাটির চাড়িতে যদি পানি দিয়ে কিছু গাছ বা লতাপাতা রেখে দিলে পরিপূর্ণ হবে বারান্দার সাজ।

গাছপালা তো থাকবেই, তার সঙ্গে খুব সামান্য আয়োজনে সাজানো বারান্দা ঘরে থাকার এই সময়ে আপনাকে দেবে একটু নিশ্বাসের জোগান। আসছে বর্ষার দিন। তো আর দেরি কেন? শুরু হয়ে যাক আজই। করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে ঘরের বারান্দাটাই হয়ে উঠুক আপনার বৃষ্টিবিলাসের এক টুকরো আঙিনা।