করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে অভিভাবকদের জন্য পরামর্শ

দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই মুহূর্তে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তবে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকলে এবং নিয়ম মেনে চললে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।

শিশুদের সঠিক নিয়মে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বিশেষ করে খাওয়ার আগে, বাথরুম ব্যবহারের পরে, অসুস্থ কারও সংস্পর্শে এলে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। হাত না ধুয়ে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ না করার কথা শিশুকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিন। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচারও শেখান। হাঁচি-কাশির সময় কনুইয়ের ভাঁজে কিংবা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে দিতে হবে। শিশুরা বড়দের দেখে শেখে। কাজেই নিজেরাও স্বাস্থ্যবিধি সঠিক নিয়মে মেনে চলুন। তারা স্বাস্থ্যবিধি সঠিক নিয়মে মানলে প্রশংসা করতে হবে।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিশুকে বাইরে না নেওয়াই ভালো। যদি একান্তই বাইরে নিতে হয়, তাহলে ছোট শিশুর হাতে কোনো কিছু দিয়ে রাখতে হবে, যেমন কাগজের ব্যাগ বা ছোট পানির বোতল। কারণ, শিশুদের যেকোনো কিছুতে হাত দেওয়ার প্রবণতা আছে এবং সেই হাত দিয়ে পরক্ষণেই সে নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করতে পারে। শিশুর হাত বারবার পরিষ্কার করে দিন।

শিশুকে সঠিক সাইজের মাস্ক পরাতে হবে। বড়দের মাস্ক তাদের পরানো উচিত নয়। কারণ, ঢিলেঢালা হওয়ায় মাস্কের প্রান্তগুলোয় ফাঁক থাকে। ফলে তা কোনো কাজে আসবে না। দুই বছরের কম বয়সী শিশুরা মাস্ক রাখতে না চাইলে পরানোর প্রয়োজন নেই।

এখন ডেঙ্গুরও মৌসুম। কাজেই শিশুকে বাইরে যাওয়ার সময় পাতলা সুতি কাপড়ের ফুলহাতা পোশাক পরাতে হবে। জুতা-মোজাও পরাতে হবে। শরীরের খোলা অংশে মস্কুইটো রিপিলেন্ট লাগালে মশা কামড়াবে না। বাইরে থেকে ফেরার পর শিশুর জুতা ঘরের বাইরে রাখুন, তার হাত সাবান দিয়ে ভালো করে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে দিন এবং বাইরের কাপড় ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে বাইরে থেকে ফিরেই শিশুকে গোসল করান।

সম্ভব হলে শিশুদের পরিবারের বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশুর প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম, সুষম খাবার ও ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমযুক্ত খেলা নিশ্চিত করুন।

ডা. শাওলী সরকার, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা শিশু হাসপাতাল