বাজারে এখন আধুনিক ফ্রিজ

ফ্রিজ এখন ঘরে প্রয়োজনীয় এক অনুষঙ্গ
ফ্রিজ এখন ঘরে প্রয়োজনীয় এক অনুষঙ্গ

করোনাভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে এই সময়ে ঘরে থাকার কথা বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে সবাই। এ সময় প্রতিদিন বাজারে না গিয়ে পুরো সপ্তাহ বা মাসের বাজার একসঙ্গে করছেন অনেকেই। এর ফলে ঘর থেকে বের হওয়ার ঝামেলা থাকল না। কিন্তু পুরো মাসের বাজার ঘরে নিয়ে এলেই তো হবে না। বিশেষ করে কাঁচাবাজার মানে শাকসবজি, মাছ–মাংস ভালোভাবে সংরক্ষণ করার যন্ত্রটিও থাকতে হবে ঘরে। বর্তমান পরিস্থিতে বাসায় একটি ভালো মানের ফ্রিজ থাকলে আপনি নিশ্চিন্তে ঘরে বসে থাকতে পারবেন। এদিকে ঈদুল আজহার সময়ও চলে এসেছে। ঈদুল আজহার সময় ফ্রিজের চাহিদাও থাকে বেশ।

এখন ফ্রিজ শুধু ঠান্ডা করা বা কাঁচা বাজার সংরক্ষণ করার যন্ত্র হিসেবেই ঘরে রাখা হয় না। ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতেও ফ্রিজ এখন ভূমিকা রাখে। কারণ, এখনকার ফ্রিজগুলোর নকশাও হয়ে থাকে নান্দনিক।

বাজারে নানা ধরনের রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে। কারিগরি দিক থেকে এগুলো হলো ডিপ ফ্রিজার, ডিরেক্ট কুল, নো ফ্রস্ট, সাইড বাই সাইড, টপ মাউন্ট, বটম মাউন্ট, আপরাইট ও সেমি কমার্শিয়াল সিরিজের ফ্রিজ।

কী আছে আধুনিক ফ্রিজে

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির স্মার্ট ফ্রিজ রয়েছে। স্মার্ট ফ্রিজে অনেক ইনভার্টার প্রযুক্তি থাকে। এতে পাঁচটি মোড কাজ করে। একটিতে ওপরে ডিপ আর নিচে সাধারণ ফ্রিজ থাকে। নতুন এই প্রযুক্তির যন্ত্রে ডিপ ফ্রিজকে রূপান্তর করে পুরোটাই সাধারণ ফ্রিজ করে ফেলা যায়। কেউ বাসার বাইরে গেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য এনার্জি সেভিং মোড চালু করে রাখতে পারেন। ফ্রিজে এখন থাকে অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি। দেশের বাজারে দেশি–বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের ফ্রিজ রয়েছে। দোকান ছাড়াও প্রায় সব ব্র্যান্ডের ফ্রিজই অনলাইন থেকে কেনা যায়। বাজারে থাকা কিছু ফ্রিজের খোঁজ ও দরদাম থাকছে এখানে।

ওয়ালটন

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ও রেফ্রিজারেটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ জানান, দেশের ফ্রিজের বাজারের ৭৫ শতাংশ এখন ওয়ালটনের দখলে (মার্কেট েশয়ার)। সে জন্য ওয়ালটন েক্রতাদের বিভিন্ন সুবিধা িদয়ে থাকে। বর্তমানে ওয়ালটন ক্রেতাদের জন্য নিয়ে এসেছে মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ। প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল প্রচারণা ‘সিজন-৭’-এ দেওয়া হচ্ছে এ সুবিধা। দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ কিনে জিততে পারেন ১০ লাখ টাকা। রয়েছে লাখপতি হওয়ার সুযোগসহ কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ক্রেতাদের এ সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন।

গোলাম মোর্শেদ বলেন, আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারী সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে ওয়ালটনের প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হচ্ছে। রপ্তানি করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশেও।

বাজারে ওয়ালটনের রয়েছে দেড় শতাধিক মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট, ডিপ ফ্রিজ ও বেভারেজ কুলার। দাম মাত্র ১০ হাজার ৯৯০ থেকে ৬৯ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে।

স্যামসাং

স্যামসাংয়ের ২৪৫ লিটারের দাম ৪২ হাজার ৯০০ টাকা। ২৭৫ লিটার ফ্রিজের দাম ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা। আরেকটি মডেলের ২৭৫ লিটারের দাম ৪৩ হাজার ৩২ টাকা। ৩২১ লিটারের দাম ৫৫ হাজার ৯০০ টাকা। আরেকটি মডেলের ৩২১ লিটারের দাম ৪৭ হাজার ৪৩২ টাকা। ৩৪৫ লিটারের দাম ৫০ হাজার ৯৫২ টাকা। ৫৫১ লিটারের ফ্রিজের দাম ৯৬ হাজার ৬০০ টাকা। ৫৯১ লিটারের দাম ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯০০ টাকা।

হিটাচি

হিটাচির ২২৩ লিটারের দাম ৪৬ হাজার ৯০০ টাকা। ৩৬৬ লিটারের দাম ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা। ৩৭৫ লিটারের দাম ৭৮ হাজার ৯০০ টাকা। ৩৭৫ লিটারের আরেকটি মডেলের দাম ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা। ৪০৩ লিটারের দাম ৮২ হাজার ৯০০ টাকা। ৪৪৩ লিটারের দাম ৮৯ হাজার ৯০০ টাকা। ৪৪৩ লিটারের আরেকটি মডেলের দাম ৯৪ হাজার ৯০০ টাকা। ৫০০ লিটারের দাম ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা। ৫৮৪ লিটারের দাম ২ লাখ ৯ হাজার টাকা।

ওয়ার্লপুল

২৬৫ লিটারে ওয়ার্লপুল ফ্রিজের দাম ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। ৩৬০ লিটারের দাম ৬৫ হাজার ৯০০ টাকা। ৪৪০ লিটারের দাম ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা। ৫০০ লিটারের দাম ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা। ৬০৩ লিটারের দাম ১ লাখ ১৮ হাজার ৯০০ টাকা।

ট্রান্সটেক

ট্রান্সটেকের ১৯৬ লিটারের দাম ৩০ হাজার ৫০০ টাকা। ২৩০ লিটারের দাম ২৯ হাজার টাকা। ২৩০ লিটারের আরেকটি মডেলের দাম ৩৪ হাজার টাকা। ২৩৯ লিটারের দাম ৩৭ হাজার টাকা। ২৯০ লিটারের দাম ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা।

শার্প

শার্পের ২৪১ লিটারের ফ্রিজের দাম ৪৪ হাজার টাকা। ২৪৭ লিটারের দাম ৫৪ হাজার ৯০০ টাকা। ৩১৬ লিটারের দাম ৪৮ হাজার টাকা। ৩৬৪ লিটারের দাম ৭০ হাজার ৭০০ টাকা। ৪২৮ লিটারের দাম ৭৫ হাজার ৪০০ টাকা। ৫৪০ লিটারের দাম ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৬৪৬ লিটারের দাম ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭২ টাকা।

এলজি

এলজির ৩০৮ লিটারের ফ্রিজের দাম ৫৬ হাজার ৫৯৫ টাকা। ৩৩৫ লিটারের দাম ৬৮ হাজার ২৬০ টাকা। ৩৮৪ লিটারের দাম ৫১ হাজার ৩৫০ টাকা। ৪৩১ লিটারের দাম ৮৮ হাজার ৭১৫ টাকা। ৬৬৮ লিটারের দাম ২ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৫ টাকা। ৬৭৫ লিটারের দাম ২ লাখ ১৪ হাজার ৬২৫ টাকা।

সিঙ্গার

সিঙ্গারের বিভিন্ন রকমের ফ্রিজ আছে বাজারে। এসব ফ্রিজের মধ্যে ১৩৮ লিটারের দাম ২৯ হাজার ৭২০ টাকা। ১৭৮ লিটারের দাম ২৯ হাজার ৩৯০ টাকা। ১৯৮ লিটারের দাম ২৮ হাজার ৪১৩ টাকা। ২০৮ লিটারের দাম ৩১ হাজার ৩৪১ টাকা। ২১৮ লিটারের দাম ৩১ হাজার ৩৪১ টাকা। ২৩৮ লিটারের দাম ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা। ২৪৩ লিটারের দাম ৩৫ হাজার ৩৮৭ টাকা।

ইকো

১৯৫ লিটারের ইকো ফ্রিজের দাম ২৮ হাজার ২১৫ টাকা। ২১৭ লিটারের দাম ৩৪ হাজার ১৭০ টাকা। ২১৮ লিটারের দাম ২৯ হাজার ৮৯৫ টাকা। ২৫২ লিটারের দাম ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা। ২৫২ লিটারের আরেকটি মডেলের দাম ৩৩ হাজার ৩৫ টাকা। ২৩৫ লিটারের দাম ৩১ হাজার ৯৯০ টাকা।

ভিশন

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ভিশন নামে ফ্রিজ বাজারজাত করছে। ভিশনের ২১৭ লিটারের দাম ৩১ হাজার ৪০০ টাকা। ২২২ লিটারের দাম ২৫ হাজার ৬০০ টাকা। ২৩৮ লিটারের দাম ২৬ হাজার ৭০০ টাকা। ২৫২ লিটারের দাম ২৭ হাজার ৮০০ টাকা। ২৬২ লিটারের দাম ৩২ হাজার ১০০ টাকা। ৩২২ লিটারের দাম ৫৪ হাজার ৪০০ টাকা।

কেনার আগে জেনে নিন

রেফ্রিজারেটর কেনার সময় ক্রেতাদের বিভিন্ন সুবিধা দেখে কেনা উচিত। বিশেষ করে দেখা উচিত ফ্রিজের ঠান্ডা করার (কুলিং) প্রযুক্তি কেমন। যে ফ্রিজের কম্প্রেসর যত ভালো, সে ফ্রিজ তত বেশি ভালো। তাই ফ্রিজ কেনার সময় কম্প্রেসরের কর্মদক্ষতা দেখে নেওয়া উচিত।

রেফ্রিজারেটর কেনার আগে বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির বিষয়টাও বুঝে নিতে হবে। বর্তমানে বেশি ভাগ কোম্পানির রেফ্রিজারেটর কিস্তিতে কেনা যায়। কয় মাসের কিস্তি বা প্রতি মাসে কী পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে, সেটা কেনার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। ‘ফ্রি ডেলিভারি’ ও ‘ইন্সটলেশন’ সম্পর্কেও জানা উচিত।