এ সময়ের ফলে যত পুষ্টি

আমাদের দেশে বিভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন ফলের সমাবেশ ঘটে, যেগুলো দেশি ফল নামে পরিচিত। এগুলো কোনোটি মিষ্টি, কোনোটি টক আবার কোনোটি অপূর্ব স্বাদযুক্ত। আমাদের দেশে পুষ্টির চাহিদা জোগানে দেশি ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশি এই ফলগুলো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণসম্পন্ন, যা জীবদেহের পুষ্টিসাধন, দেহের ক্ষয়পূরণ, দেহের রোগ প্রতিরোধক শক্তি উৎপাদন এবং কর্মশক্তি ও তাপ উৎপাদনে বিরাট ভূমিকা রাখে। এই সময়ের মৌসুমি কিছু ফলের পুষ্টিগুণ নিচে দেওয়া হলো।

কাঁঠাল

আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠাল। দেশের প্রায় সবখানেই এটি পাওয়া যায়। কাঁঠালে আছে প্রচুর শক্তি। এতে শর্করার পরিমাণ বেশি। কাঁঠালের ক্যালরি প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ কিলোক্যালরি এবং খনিজ লবণের পরিমাণ প্রায় ০.৯ গ্রাম।

আম

১০০ গ্রাম আমে ১০০০ থেকে ১৫০০ আইইউ ভিটামিন এ থাকে।

তরমুজ

তরমুজে আছে লাইকোপেন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পানি। অতিরিক্ত ঘাম এবং তৃষ্ণা দূর করতে তরমুজের রস খুবই কার্যকর। কাজের কারণে ক্লান্তি যতই আসুক, তরমুজের রস খেলে অল্প সময়েই ক্লান্তি দূর হয়। তরমুজের বীজ বেটে ঠান্ডা পানিতে চিনিসহ মিশিয়ে খেলে যকৃৎ পরিষ্কার থাকে।

লিচু

লিচু বেশ পুষ্টিকর ও লোভনীয় ফল। ফলের রসাল অংশ তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করে। কাশি, পেটব্যথা ও টিউমার বৃদ্ধি রোধে লিচু অনেক উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে আছে ৬১ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১৩.৬০ গ্রাম শর্করা, ১.১০ গ্রাম আমিষ, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৭০ মিলিগ্রাম লৌহ, ৩১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

জামরুল

রসাল ও হালকা মিষ্টি জামরুল গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায়। বর্তমানে সাদা, খয়েরি, লাল ও হালকা গোলাপি রঙের জামরুল দেখা যায়। এটি ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল। বহুমূত্র রোগীর জন্য জামরুল অনেক উপকারী। খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম জামরুলে ৩৯ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ৮.৫০ গ্রাম শর্করা, ০.৭০ গ্রাম আমিষ, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ১৪১ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন বিদ্যমান।

তালের শাঁস

যদিও তাল ভাদ্র মাসে পাকে, তবে কাঁচা/কচি তালের শাঁস এখন বেশ জনপ্রিয়। এটি রসাল বলে দেহে শীতল আমেজ আনে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে।

আনারস

যাঁরা জ্বরে ভুগছেন, তাঁরা নিয়মিত আনারস খান। সুস্বাদু ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল হলো আনারস। সর্দি-কাশিতে আনারস খেলে কাজে দেয়। কৃমি সারাতেও এটি কার্যকর।

খেয়াল রাখুন

করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময় বাজার থেকে এসব ফল কিনে এনে সরাসরি খাওয়া যাবে না। কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে শুকিয়ে তারপর খান।