নীড় ছোট ক্ষতি নেই হোক সুবাসিত

নিয়মিত ঘরের চাদর ও কুশন কভার পরিষ্কার করলে ঘরে দুর্গন্ধ ছড়াবে না। মডেল: আইরিন, ছবি: অধুনা
নিয়মিত ঘরের চাদর ও কুশন কভার পরিষ্কার করলে ঘরে দুর্গন্ধ ছড়াবে না। মডেল: আইরিন, ছবি: অধুনা

ঘরে তীব্র বা কটু গন্ধ কেউ চাই না। সবাই চাই ঘরে থাকবে মিষ্টি গন্ধ, যেন এই সময়ের মৃদুমন্দ বাতাস বইবে সুবাস নিয়ে। সেই কবে একবার গিয়েছিলেন পাঁচতারকা হোটেলের লবি ধরে হেঁটে হেঁটে। একরাশ আলট্রা ফ্রেশ, মিষ্টি গন্ধের ঢেউ আমোদিত করেছিল। মনে করেছিলেন এমনই হোক না নিজের নীড়ের অন্দর।

কেন ঘরে থাকবে না সুবাস। চেনা পরিচিত গন্ধ ঘরে ঢুকলেই আমন্ত্রণ জানাবে। মনে হবে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ, অভয়াশ্রম। পবিত্র আবাস। খোঁজ করুন কী কী কারণে ঘরে হতে পারে কটু গন্ধ। হয়তো দুর্গন্ধি ডিশওয়াশার, শাওয়ার ড্রেনের রহস্যময় গন্ধ, পোষা প্রাণী, এমনকি অবাঞ্ছিত আর্দ্রতা ক্রমে ক্রমে জমে ঘরে সৃষ্টি করবে এমন তীব্র গন্ধ। খোঁজ করুন সেসব ভৌতিক গন্ধ।

 ১. হতে পারে পোষা প্রাণী এমন গন্ধের জন্য দায়ী। অনেকের ঘরে পোষা প্রাণী হয়তো মেনি বিড়াল পরিবারের সদস্যের মতো। আদরসোহাগে আছে কোলে, বিছানায়। লোমপতন যখন হয়, তখন ব্যাকটেরিয়া গজায়, নোংরা হয় সহজে। তাই এদের গোসল করাতে হয় নিয়মিত। সাফসুতরো করতে হয়। নিদ্রা আর আহারের স্থান পরিষ্কার করতে হয় সাবানপানি দিয়ে। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে সোফা আর বিছানার তলা পরিষ্কার করতে হয়, গন্ধ যেন না জমে।

২. ভেজা কাপড়। স্নানঘরে ভেজা কাপড় বাস্কেটে জমা হয়ে থাকবে না। সত্বর দেবেন লন্ড্রিতে, নয়তো নিজেই সাবানপানি দিয়ে ধুয়ে নিন স্নানের আগে-পরে।

৩. শয্যা। বিছানার চাদর, কম্বল, বালিশে হতে পারে গন্ধ। নিজের গায়ের গন্ধ নিজের নাকে পাওয়া যায় না। তাই শোয়ার ঘরে থাকে নিজের গায়ের গন্ধ। শয্যায় মূল আসামি বিছানার চাদর। শরীরের ঘাম, তেল আর ময়লা লেগে চাদরে হয় কটু গন্ধ। তাই চাদর ধুতে হয় নিয়মিত। হপ্তায় দুবার তো বটেই।

৪. আবর্জনার বাক্স থেকেও গন্ধ ছড়ায়। ঘরের বিনে জমানো আবর্জনা, হোক সেটা তরল বা কঠিন, অল্প জমেও হয় কটু গন্ধ। তরল ব্লিচ দিয়ে স্প্রে করবেন, এরপর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। নিয়মিত নিষ্কাশন করবেন।

৫. ডিশওয়াশারে ছাতা পড়ে সহজে। তাই অল্পতেই হয় কটু গন্ধ। উষ্ণ-আর্দ্র পরিবেশ ছত্রাকের মহাস্বর্গ। আর খাদ্যকণা যদি থেকে যায়, তাহলে সোনায় সোহাগা। তাই গরম বাতাসের পরিবহন হবে জরুরি।

৬. বর্জ্য ফেলার স্থানেও গন্ধ ছড়ায়। তাই রান্নাঘরে কটু গন্ধ হওয়ার সুযোগ থাকে। এই গন্ধ থেকে বাঁচতে থাকতে হবে পরিচ্ছন্ন। ময়লা ফেলার স্থান রাখতে হবে পরিষ্কার।

৭. নতুন আসবাবেও এক ধরনের গন্ধ ছড়ায়। নতুন সোফার গন্ধ পছন্দ? যেমন নতুন গাড়ির গন্ধ অনেককে টানে। নতুন টাকার গন্ধ কিংবা মনে আছে নতুন ক্লাসে উঠে নতুন বই পেয়ে সেই বইয়ের যে সুন্দর গন্ধ? কি নস্টালজিক না! কিন্তু আসবাবের সে গন্ধ উদ্বায়ী যৌগ দিয়ে করা। তাই অন্দরে তা যেন বিষ, অস্বাস্থ্যকর। এই গন্ধ ক্ষতিকর হতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য। অনেকের এই গন্ধে মাথা ধরা, নাক-গলা ধরার সমস্যা হয়।

তাই চাই এয়ার পিউরিফায়ার, সঙ্গে কার্বন ফিল্টার হলে ভালো। ঘর থাক সুবাসিত। অনেক দিন পরও যদি ফেরেন নিজ ঘরে, মনে হবে একরাশ সুবাস যেন ঘিরে ধরল, আর তখনই পুরোনো কত স্মৃতি আচ্ছন্ন করবে। ঘরে ফেরার আনন্দ হবে আরও বেশি। ঠিক যেন আপনজনের কাছে এলাম ফিরে।