সালমান খান মায়ের কাছে 'স্যাল'

সালমান খান
সালমান খান
সালমান খানের মা মাসুদা খান
সালমান খানের মা মাসুদা খান

খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা, উদ্যোক্তা ও শিক্ষাবিদ সালমান খান। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খানের ওয়েবসাইট গোটা দুনিয়ায় দূরশিক্ষণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এ সাইটের প্রশিক্ষণ ভিডিও দেখে মুগ্ধ বিল গেটসও। নিজের ছেলেকে অনুসরণ করতে বলেছেন এ সাইট। সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন সালমানের মা মাসুদা খান। সালমান খানের ছোটবেলার গল্প শোনালেন তিনি।
ঢাকার গুলশানে বসে কথা হচ্ছিল সালমান খানের মা মাসুদা খানের সঙ্গে। কাছের মানুষদের ‘গুলনার’। থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্সে। ছেলে সালমান খান অবশ্য কাজের সূত্রে থাকেন ক্যালিফোর্নিয়াতে।
নায়ক সালমান খানের নামে কেন নাম রাখলেন? এমন প্রশ্ন শুনে একচোট হেসে নিলেন মাসুদা খান। বললেন, ‘সালমান নামটা আমার খুব পছন্দের ছিল। কারও নামের সঙ্গে মিল রেখে রাখিনি। আমার দুই ছেলেমেয়ের নাম আমি রেখেছি। সালমানকে আমি আদর করে “স্যাল” বলে ডাকি।’

বিয়ের দিন মায়ের সঙ্গে
বিয়ের দিন মায়ের সঙ্গে

ছেলে পৃথিবীর সবাইকে নানা ধরনের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। এই মেধাবী ছেলেকে মা কীভাবে পড়াতেন। ‘ছোটবেলায় সালমান খুব দুষ্ট ছিল। তবে লেখাপড়া ঠিকমতোই করত। যদিও বাড়িতে আমি খুব একটা পড়তে দেখিনি ওকে। বেশির ভাগ সময় স্কুল থেকে ফেরার পথে বাসে বসেই বাড়ির কাজ (হোমওয়ার্ক) শেষ করত। আর গণিত আমি নিজেও খুব একটা ভালো পারতাম না। ও নিজে নিজেই করত। সালমানের বাবা শিশু বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি খুব জ্ঞানী ছিলেন। আমার মনে হয়, ছেলে বাবার মতো মেধাবী হয়েছে। আমার কিছু গুণও পেয়েছে—মিশুক, আড্ডাবাজ আমার মতো। সহজেই কাউকে আপন করে নিতে পারে।’ বলেন মাসুদা খান।
জানা গেল ছোটবেলায় সালমান খান খুব চঞ্চল ছিলেন। খেলনার জন্য জেদ করত সালমান। সেই ছেলেকে এখন মা জোর করেও কিছু কিনে দিতে পারেন না। তবে এবার বাংলাদেশ

ছোটবেলায় জন্মদিনে
ছোটবেলায় জন্মদিনে

থেকে যাওয়ার সময় ছেলে, ছেলের বউ ও দুই নাতি-নাতনির জন্য পোশাক কিনেছেন।
সালমান খুব সাধারণ জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন। বিলাসিতা, বাহুল্য একদম পছন্দ করেন না। ছিমছাম পরিপাটি জীবন তাঁর। কাজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসেন। কীভাবে অন্যের উপকার করা যাবে, সারা বিশ্বের শিশুদের কীভাবে আরও সহজভাবে শিক্ষা দেওয়া যায় তাই তিনি ভাবেন। মায়ের মতে, কাজপাগল স্যাল ব্যক্তিজীবনেও ছেলে, ভাই, স্বামী ও বাবা হিসেবে সফল। সবার দিকে সমান নজর তাঁর।
১৯৮৪ সালের দিকে আট বছর বয়সে একবার বাংলাদেশে এসেছিলেন সালমান। এরপর আর আসা হয়নি তাঁর। মাসুদা খানের ইচ্ছা শিগগিরই ছেলেকে নিয়ে দেশে আসার। বিয়ের পর মাসুদা খান স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সালমানের বয়স যখন ১২, তখন তাঁর বাবা মারা যান। সংসার, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার দায়িত্ব সব সামলেছেন তিনি। ‘হঠাৎ ওদের বাবা মারা গেলেন। সেটা আমাদের জীবনে বড় ধাক্কা ছিল। অত টাকা ছিল না। দামি ভালো স্কুলে পড়াতে পারিনি ওদেরকে। সরকারি স্কুলে পড়েছে ওরা দুই ভাইবোন। কারও সহযোগিতা ছাড়া নিজেরাই নিজেদের লেখাপড়া করত। আমার বাবা সব সময় বলতেন, সালমান অনেক বড় কিছু হবে। আজ সেই কথা সত্যি হয়েছে। ওকে এসব বললে হেসে বলে, মা এত প্রচারের পেছনে না ছুটে কাজটা তো আগে করতে হবে। খুব বিনয়ী ছেলেটা আমার।’
আগে সালমান খানের পরিচয় ছিল তিনি মাসুদা খানের ছেলে। এখন উল্টো। ছেলের পরিচয়ে পরিচিত হয়ে মা খুব গবির্ত। মনে করেন, আজ তিনি সফল। ছেলের ওপর তিনি সব সময় ভরসা করেছেন। বিশ্বাস রেখেছেন। ছেলেও তাঁর বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়েছেন।