চোখ ওঠা আতঙ্কের কিছু নয়

দচশমা রোদে পরবেন, এমনটাই স্বাভাবিক। তবে আরেকটি কারণেও রাতে-দিনে রোদচশমা পরা হয়। বিশেষ করে বাড়ির বাইরে বা কর্মক্ষেত্রে। সেটি হলো, চোখ উঠলে। এটা একধরনের ছোঁয়াচে রোগ। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় রোগটি। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা যেকোনো জিনিস থেকে রোগের জীবাণু সহজেই ছড়ায়। তাই আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিস সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আলাদা করে রাখতে হবে।স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, ‘চোখ ওঠা রোগকে চিকিত্সাশাস্ত্রে কনজাঙ্কটিভাইটিস বা রেড আই বলে। রোগটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। কখনো কখনো রোগটি ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি কিংবা রাসায়নিক দ্রব্যের কারণেও হয়।’চোখ উঠলে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যায়—চোখ লাল হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়া এবং চোখের কোণে ময়লা জমা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।কী করতে হবে চোখ উঠলে সে সম্পর্কেও বলেন সামছুল হক।ষ অ্যালার্জিজনিত কারণে চোখ উঠলে প্রধান চিকিত্সা হলো চোখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে।

ষ কখনো কখনো নন স্টেরয়েড অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ অথবা অ্যান্টি হিস্টামিন দেওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।

ষ ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে চোখ উঠলে কোনো ধরনের চিকিত্সা ছাড়াই এটি ভালো হয়ে যায়।

ষ আর যদি রোগটি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তবে চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে চোখের অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ অথবা মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।

ষ ভাইরাসজনিত কারণে চোখ ওঠার নির্দিষ্ট কোনো চিকিত্সা নেই। এ ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিলেই ভালো ফল পাওয়া যাবে।

ষ রাসায়নিক দ্রব্যের কারণে চোখ ওঠার ক্ষেত্রে রিঙ্গার ল্যাকটেট, স্যালাইন পানি কিংবা পরিষ্কার পানি দিয়ে বারবার চোখ ধুতে হবে।

ষ কোন কারণে চোখ উঠেছে নিশ্চিত হতে চাইলে করতে হবে সোয়াব কালচার পরীক্ষা।

ষ ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় এ সময় বাড়ির বাইরে বের না হওয়া ভালো। তবে বের হলে অবশ্যই রোদচশমা পরতে হবে।

ষ আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহূত জিনিস আলাদা করে দিতে হবে।

মনে রাখতে হবে, চোখে ওষুধ লাগানো কিংবা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

প্রায় ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের চিকিত্সা ছাড়াই চোখ ওঠা ভালো হয়ে যায় এবং রোগটি স্থায়ী হতে পারে  পাঁচ-সাত দিন। তাই এ রোগ নিয়ে সত্যিই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতনতাই যথেষ্ট।

ষ লেখক: চিকিত্সক