সম্মানজনক পেশা শিক্ষকতা

দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬২ হাজারের বেশি, সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৮ হাজার ৮৮টি আর কলেজ আছে ৭২৬টি। এ ছাড়া রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও কিন্ডারগার্টেন। প্রতিবছরই এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়।

বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শিক্ষকতার সুযোগ l ফাইল ছবি
বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শিক্ষকতার সুযোগ l ফাইল ছবি

ছোটবেলা থেকেই অনেকের স্বপ্ন থাকে একজন ভালো শিক্ষক হওয়ার। দেশের প্রায় সব জেলা-উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া জেলা শহরগুলোতে বাড়ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা অধিদপ্তরগুলোর তথ্যসূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬২ হাজারের বেশি, সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৮ হাজার ৮৮টি আর কলেজ আছে ৭২৬টি। এ ছাড়া রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও কিন্ডারগার্টেন। প্রতিবছরই এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। তাই লক্ষ্য যদি থাকে শিক্ষক হওয়ার, তাহলে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে আপনিও নিতে পারেন এ সুযোগ।
আবেদনের যোগ্যতা
প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের পদগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক। সরকারি কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হতে চাইলে পুরুষদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক পাস হতে হবে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে পাস হলে চলবে। আর প্রধান শিক্ষকদের জন্য অবশ্যই স্নাতকোত্তর পাস লাগবে। শিক্ষাজীবনে যদি দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হন, তাহলে দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পেতে পারেন। তবে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে চাইলে অবশ্যই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করতে হবে। নিবন্ধন পাসের সনদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কমিটির মাধ্যমে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ পেতে পারেন।
সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য বিসিএস পাস হতে হবে। বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকদের যোগ্যতা প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার বাটাজোড় বিএম উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হবে, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে ভালো ফলাফলসহ স্নাতকোত্তর পাস হতে হবে। সাধারণত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে থাকেন। এ ছাড়া পিএইচডি, এমফিল ডিগ্রি থাকলে অগ্রাধিকার পাবেন।
নিয়োগপদ্ধতি
প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ পেতে চাইলে প্রার্থীকে ৮০ নম্বরের লিখিত ও ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করা বাধ্যতামূলক। নিবন্ধন পরীক্ষা হয় ২০০ নম্বরের মধ্যে। যার মধ্যে ১০০ নম্বর থাকে আবশ্যিক (বাংলা, অঙ্ক, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান) বিষয়ে আর ঐচ্ছিক বিষয় থাকবে ১০০ নম্বরের। উভয় বিষয়ে আলাদা করে ৪০ নম্বর করে পেতে হবে। তাই শিক্ষক হতে হলে নিবন্ধন পাস করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বেতনভাতাদি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন সহকারী শিক্ষক জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী ১১ হাজার টাকা পাবেন। আর বেসরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানভেদে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। বেসরকারি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকেরা পাবেন ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। শিক্ষকতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আসমা বিন্তে ইকবাল জানান, সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক বা শিক্ষক প্রতিষ্ঠানভেদে মাসিক ১৮ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।