শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে মা-বাবার জন্য ৬ পরামর্শ

>পৃথিবী নিয়ে শিশুদের কৌতূহল অসীম। তাদের কোমল হৃদয় যা দেখে, তা-ই বিশ্বাস করে; যেভাবে শেখে, সেভাবেই কল্পনা সাজায়। শৈশবকাল রঙিন করে তুলতে মা-বাবার ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। শৈশবের স্মৃতিটুকু পরোক্ষভাবে হলেও তার সমস্ত জীবনকে প্রভাবিত করে। আবেগ, সামাজিকতা এবং বুদ্ধিদীপ্ত মনোভাব—এই তিন ক্ষেত্রে শিশুর দক্ষতা বাড়াতে পারলে মা-বাবা নিশ্চিত হতে পারবেন, তাঁদের শিশুটি সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে লিখেছেন ফারজানা হালিম
.
.


সন্তানকে সময় দিন, কথা বলুন
জন্মের পর থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত শিশু প্রায় ৮৮-৯৮ শতাংশ শব্দ ব্যবহার করে, যেগুলো মা-বাবার কাছ থেকে শুনে শুনে শেখা। শিশুর সঙ্গে যত বেশি কথা বলা হবে, ওর শব্দভান্ডার ও কাজের পরিধি তত বেশি বাড়বে। মা-বাবা এবং সন্তানের কথোপকথন, শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও বই পড়ার সামর্থ্যকে মজবুত করে।

সন্তানের সঙ্গে পড়ে নিয়ে সময় কাটান
গবেষণায় দেখা যায়, মা-বাবা তাঁদের শিশুসন্তানের সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট কাটালে সেই শিশুরা বিদ্যালয়ের পড়াশোনায় অন্যান্য শিশুদের তুলনায় এগিয়ে থাকে। অল্প বয়স থেকেই শিশুকে বাসায় পড়াতে পারলে বিদ্যালয়ে সে খুব দ্রুত পড়ে আত্মস্থ করতে পারবে।

দৌড়-ঝাঁপের খেলাধুলার সুযোগ দিন
খেলাধুলা মানেই সময়ের অপচয় নয়। বড় মাঠ কিংবা খোলা জায়গায় সমবয়সীদের সঙ্গে নিয়মিত খেলাধুলায় শিশুর বিভিন্ন ধরনের বিকাশ ঘটে, যা পরে তাকে অনেক কাজ সহজে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। যেমন: সিদ্ধান্ত গ্রহণ, স্মৃতিশক্তি কাজে লাগানো, যুক্তি প্রদর্শন, সমস্যা সমাধান, আত্মনিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।

টিভি দেখার সময় নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত টিভি দেখার কারণে শিশুর মস্তিষ্কের যে অংশটি দৃষ্টিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে চাপের সৃষ্টি হয় এবং তারা সৃজনশীল কল্পনা থেকে দূরে সরে যায়। দিনে এক ঘণ্টা বা এর কিছু বেশি সময় টিভি দেখলে শিশুদের মস্তিষ্ক সঠিক মাত্রায় সচল থাকে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিভি দেখা উচিত নয়।


শিশু-শিল্পীটার যত্ন নিন
কিন্ডারগার্টেন বা শিশুবিদ্যালয়ে যদি ক্লাসে জিজ্ঞেস করা হয়, তোমরা কে কে শিল্পী? তখন সবাই হাত তুলে জানায়, তারা প্রত্যেকে শিল্পী! তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণিতে কিছুটা দ্বিধায় হাত ওঠার সংখ্যা কমে, ষষ্ঠ বা এর ওপরের শ্রেণিতে মাত্র তিন-চারটি হাত হয়তো ওপরে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রত্যেক মানুষই সৃষ্টিশীল। তবে অনেকেই নিজের উপযুক্ত ক্ষেত্রটি খুঁজে পায় না। সৃজনশীলতা শিশুকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মা-বাবার উচিত, শিশুর জন্য সেই উপযুক্ত জায়গাটি খুঁজে পেতে সাহায্য করা।


শিশুকে আদুরে স্পর্শ দিন
স্পর্শ, হাসি, গান শোনানো, গল্প বলা ইত্যাদি অনুভূতি বিনিময় বা ছোট ছোট আচরণ একটি শিশুর জন্য খুব দরকারি। মস্তিষ্কের উন্নতি এবং জীবনে চলার জন্য মজবুত ভিত্তি তৈরি করতে আপনার আদর তাকে অনেকখানি এগিয়ে দিতে পারে।

.
.