'মোশন সিকনেস' কাটাবেন যেভাবে

‘মোশন সিকনেস’ কাটাতে চাইলে গাড়ির সামনের আসনের দিকে চেয়ে না থেকে জানালার বাইরের দৃশ্য দেখুন, কাজে দেবে। ছবি: প্রথম আলো
‘মোশন সিকনেস’ কাটাতে চাইলে গাড়ির সামনের আসনের দিকে চেয়ে না থেকে জানালার বাইরের দৃশ্য দেখুন, কাজে দেবে। ছবি: প্রথম আলো

সপ্তাহের ছয় দিন ঘাড় গুঁজে কাজ করেছেন। কিংবা রোজ ঘরের কাজ করতে করতে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। চাইছেন সাপ্তাহিক ছুটিতে একটা ঝটিকা সফর দেবেন। সপরিবারে কিংবা একা চেপে বসলেন বাসে। আধা ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই অসহ্য মাথাব্যথায় আপনি কাতর! কিংবা অবস্থা আরও খানিকটা সঙিন হলো, ফলে বমিও করে ফেললেন! কেমন লাগবে তখন?

নিঃসন্দেহে চূড়ান্ত বাজে! বাসে ওঠার পর এই মাথাব্যথা কিংবা বমির কারণটা কী? কেতাবি ভাষায় এটাকে বলে ‘মোশন সিকনেস’। এটা কাটানোর কিছু বুদ্ধি বাতলে দিয়েছে মার্কিন ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডার। নিয়মগুলো মেনে চলুন, কাজে দেবে।
তার আগে জেনে নিন কেন ‘মোশন সিকনেস’ হয়। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রবার্ট স্টার্ন। তাঁর ভাষায়, ‘মোশন সিকনেস হয় “সেনসোরি মিসম্যাচের” কারণে। মানবদেহের ভেস্টিবিউলার সিস্টেম (যেটা আমাদের স্পেস-সংক্রান্ত সতর্কতা নিয়ন্ত্রণ করে) এবং ভিশন (দৃষ্টি) সিস্টেম মস্তিষ্কে যখন মিশ্র সংকেত পাঠায়, তখন সে অবস্থাকে বলা হয় “সেনসোরি মিসম্যাচ”। আমরা যখন পেছনের আসনে বসে থাকি, তখন মনে হয় গাড়িটার গতি বেড়ে গেছে। কিন্তু চোখ দেখে সামনের আসনটা অনড়, গতিহীন। গতির কারণে আমাদের গা গুলায় না, গন্ডগোলটা বাধে আমাদের ভিশন সিস্টেমে। মোটকথা, আমরা গতি অনুভব করি, কিন্তু চোখে দেখতে পাই না। ফলে মোশন সিকনেসে আক্রান্ত হই।’
তাহলে কী করলে মোশন সিকনেসের চক্করে পড়ব না আমরা? পড়ুন সেই নিয়মগুলো—
১. সামনের আসনের দিকে না তাকিয়ে রাস্তার দিকে তাকান। প্রকৃতির শোভা উপভোগ করুন। গাড়ির গতির সঙ্গে সঙ্গে পথঘাট-গাছপালাও চলমান মনে হবে। ভিশন সিস্টেম উল্টোপাল্টা সংকেত পাঠাবে না মস্তিষ্কে।
২. এই নিয়ম কেবল বাসের বেলায় নয়, যেকোনো গাড়ি, উড়োজাহাজ এবং নৌকায় উঠলেও মেনে চলুন। (সাবমেরিনে উঠে মোশন সিকনেস হলে কী করতে হবে, এটা নিয়ে এখনো গবেষণা হয়নি!)
৩. মোশন সিকনেসের সঙ্গে বাহনের ভেতরের উৎকট গন্ধ যোগ হলে ব্যাপারটা আরও বিভীষিকাময় হয়ে ওঠে! তাই বাস বা যেকোনো বাহনের ভেতরের উৎকট গন্ধ দূর করার উদ্যোগ নিন। এ ক্ষেত্রে ভালো মানের এবং অবশ্যই ভালো ঘ্রাণের এয়ারফ্রেশনার কাজে দেবে।
৪. বাসে উঠলে আপনার পছন্দের এয়ারফ্রেশনার স্প্রে না করতেই পারে। অপছন্দের এয়ারফ্রেশনার স্প্রে করা হলে বেশির ভাগ সময় হিতে বিপরীত হয়। তাই বাসে অসুস্থ বোধ করলে সুপারভাইজারকে বলুন, ওই এয়ারফ্রেশনার যেন আর স্প্রে না করেন।
৫. ব্যক্তিগত গাড়িতে উঠলে সুযোগ বুঝে চলতি পথে কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিতে পারেন।
৬. মোবাইল ফোন বা ট্যাবের দিকে তাকিয়ে থাকলেও মোশন সিকনেসে কাবু হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। তাই প্রয়োজনের বাইরে সেগুলো ব্যবহার না করাই উত্তম।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার