অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কিসে পাবেন?

ফল ও ফলের রসের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে। মডেল: সোনিয়া, ছবি: অধুনা
ফল ও ফলের রসের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে। মডেল: সোনিয়া, ছবি: অধুনা

অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ব্যাপারে আজকাল আমরা জানছি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও সুস্বাস্থ্যের জন্য এটি দরকার। কিন্তু এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে কতটুকু দরকার এবং কোন কোন খাবার থেকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যাবে, তা জানা নেই অনেকের।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কেন প্রয়োজন?

বিভিন্ন কারণে শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ সামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে খুব সামান্য, তবে অবশ্যই প্রয়োজন আছে। শরীরে যেসব কারণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রয়োজন হয়, তা হলো—

*অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে

*সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে

*ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’-এর অভাবজনিত ক্ষতি দূর করে

*প্রাণোচ্ছলতা বজায় রাখে

*স্মৃতিশক্তি বজায় রাখে

*ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। একজন ব্যক্তি যত বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খাবেন, তাঁর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তত বাড়বে।

কোন কোন খাবারে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে

*শাকসবজি ও ফলমূলে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া যেসব খাবারে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, তা হচ্ছে ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘সি’, বিটা ক্যারোটিন, কাঠবাদাম, গ্রিন টি, আনারাস, আঙুর, ভুট্টা, লাল আটা, বাদাম তেল, জলপাই, খেজুর, উদ্ভিজ তেল, ব্রোকলি প্রভৃতি।

*প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি অবশ্যই থাকা উচিত। ক্যালসিয়াম ও আঁশসমৃদ্ধ খাবারেও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। সারা দিনে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা উচিত। কারণ, পানিতেও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে।

*বিভিন্ন রকমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন বিটা ক্যারোটিন চোখের জন্য খুব উপকারী, ফ্লাভানোয়েড হার্টের জন্য ভালো।

*অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের অতি বেগুনি রশ্মির কারণে যে ক্ষতি হয়, তা প্রতিরোধ করে।

*হৃদ্‌রোগ, চোখের বিভিন্ন রোগ, স্মৃতিশক্তিজনিত যেকোনো সমস্যা প্রতিরোধ করে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

*অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় থাকে, চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুল পড়া রোধ করে। এটি আয়রন লেভেল কার্যকরভাবে রক্ষা করে হিমোগ্লোবিনের সমতা বজায় রাখে। যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গ্রহণ করলে শরীর দুর্বল হয় না।

অ্যান্টি অক্সিডেন্টের অভাবে কী হতে পারে?

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর অভাবে লিভারে সমস্যা হতে পারে, ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়, খুব কম বয়সে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যায় এবং অনেক সময় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।

সুতরাং সবারই প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে এমন খাবার রাখা উচিত।

সূত্র: নিউট্রেক্স, গ্লোবাল হিলিং সেন্টার