>পেশাগত, শিক্ষাগত বা অন্য কোনো কারণে যাঁরা মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকেন তাঁদের জন্যই ছিল মা দিবসের এ আয়োজন। অধুনায় ছাপা কুপনে মাকে নিয়ে পাঁচটি পঙ্ক্তি লিখতে বলা হয়েছিল সন্তানকে। সারা দেশ থেকে অসংখ্য সন্তান অংশ নিয়েছেন এই আয়োজনে। তাঁদের মধ্য থেকে লটারি করে বিজয়ী হয়েছেন ১২ জন। মা দিবসে সেই সন্তানদের পক্ষ থেকে প্রথম আলোর প্রতিনিধি ও বন্ধুসভার বন্ধুরা গিয়েছেন তাঁদের মায়ের কাছে। ফুল, মিষ্টি, শাড়ি আর নানা ধরনের উপহারের সঙ্গে নিয়ে গেছেন মাকে উদ্দেশ করে লেখা সন্তানের সেই ভালোবাসার পঙ্ক্তিমালা। মায়েদের জন্য এটা ছিল বিস্ময়। সেই ১২ মায়ের এবং সন্তানদের অনুভূতি নিয়েই এ আয়োজন।

মাকে নিয়ে ছেলের লেখা উক্তি মা নিজেই পড়ে শোনান ঘরের সবাইকে। বলেন, ‘আমার ছেলে আজ কাছে নেই, এর পরও আমাকে মনে করে যা লেখা লিখেছে, তা পড়ে মনটা ভরে গেছে।’ এই মা নোয়াখালীর সামনা আফরোজ। তাঁর ছেলে জিয়াউল হক থাকেন ঢাকায়।
রোববার বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে মাকে নিয়ে লেখা ছেলে জিয়াউল হকের পঙ্ক্তিমালা, ফুল মিষ্টি ও উপহার নিয়ে নোয়াখালীর বন্ধুসভার বন্ধু ইমরান হোসেন, ওমর ফারুক, ফারহানা পড়শী ও রাখি মজুমদার হাজির হন নোয়াখালী সদরের সাহাপুরে। এখানেই থাকেন সামনা আফরোজ।
জেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সাহাপুর। ভাঙাচোরা রাস্তায় প্রথমে ইজিবাইক, পরে অটোরিকশা, আর শেষে হাঁটা পথ।
বাড়িতে যাওয়ার কয়েক মিনিট পর সামনে আসেন জিয়াউল হকের পঞ্চাশোর্ধ্ব মা সামনা আফরোজ। বলেন, ‘আপনার কারা?’ তাঁর ধারণা ছিল, ছেলে বড় হয়েছে, হয়তো বিয়ের জন্য পাত্রীপক্ষের কেউ বাড়িঘর দেখতে এসেছেন।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ছেলের হয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য যাওয়ার কথা বলতেই সবার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘আমার ছেলের হয়ে আজ আপনারা আমার কাছে এসেছেন। আমার ছেলে কাছে না থাকলে কী হবে, আপনারাই আমার সন্তান।’