আমাদের দুই বন্ধু

মোয়াজ্জেম হোসাইন ও হুমায়ন কবির
মোয়াজ্জেম হোসাইন ও হুমায়ন কবির

সুমন মোল্লার ফোন। ‘হ্যালো’ বলতেই ভেসে এল বুকফাটা কান্নার শব্দ। সুমন কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে মোয়াজ্জেমের (২৩) কথা বলল। মোয়াজ্জেম হোসাইন নেই। সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ। মোয়াজ্জেম যাচ্ছিল জীবন বাঁচাতে। একজনকে রক্ত দিতে। এর আধা ঘণ্টা আগে সুমন মোল্লার সঙ্গে কথা হয় মোয়াজ্জেমের। আগামী পাঠচক্রের বিষয় কী হবে। কী বই নিয়ে আলোচনা হ​েব। এসব বিষয়ে।
৬ সেপ্টেম্বর ভৈরবে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে সে চলে গেছে না ফেরার দেশে। খুব দ্রুত তার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। কান্নায় ভেঙে পড়ে ভৈরবের বন্ধুরা। অন্যান্য বন্ধুসভার বন্ধুরাও শোকে মুহ৵মান হয়ে পড়ে।
হুমায়ন কবির (২৪) গাইবান্ধা বন্ধুসভার বন্ধু। ভদ্র, বিনয়ী এবং শান্ত। ২ সেপ্টেম্বর আমরা তাকেও হারিয়েছি। সড়ক দুর্ঘটনায়। একই মাসে আমরা দুজনকে হারালাম। দুজনই ছিল অনার্সের ছাত্র। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে করত বন্ধুসভা। বন্ধুসভার নানা কাজে যুক্ত ছিল হুমায়ন। বন্ধুসভাকে ঘিরে ছিল তার স্বপ্ন। স্বপ্ন পূরণের সব আকাঙ্ক্ষা শেষ করে দিল সড়ক দুর্ঘটনা।
ভৈরব ও গাইবান্ধায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছিল বন্ধুরা। ভৈরবে হয়েছে মানববন্ধনও।

এমনটি আমরা চাই না। এমন যেন আর না ঘটে। দেশের সব সড়ক নিরাপদ হোক। সড়ক দুর্ঘটনায় আর কোনো মায়ের কোল যেন খালি না হয়। আর যেন কোনো বন্ধুকে এভাবে হারিয়ে আমাদের কাঁদতে না হয়।

ভৈরব ও গাইবান্ধার বন্ধুদের মতো সারা দেশের অসংখ্য বন্ধু শোক প্রকাশ করেছে। আমরা সবাই মোয়াজ্জেম হোসেন ও হুমায়ন কবিরের আত্মার শান্তি কামনা করি।

সভাপতি

প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ