আমাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তবে মেয়েটির স্বামী–সন্তান আছে

পাঠকের প্রশ্ন বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন পাঠকেরা। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবার

মিতি সানজানা

প্রশ্ন: আমি মাস্টার্সে পড়ি। আমি একজনকে পছন্দ করি, সেও আমাকে পছন্দ করে। আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তবে সে বিবাহিতা। একটি সন্তানও আছে। এখন সে চাচ্ছে আমরা বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করি। সে তার বর্তমানে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে চায়। কিন্তু আমি কী করব বুঝতে পারছি না। দয়া করে আমাকে পরামর্শ দিন।

রেজা, ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: আপনার চিঠির জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনারা দুজনেই যদি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে অবশ্যই সেই বিবাহিত নারীকে সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া মেনে আগে তাঁর স্বামীকে তালাক দিতে হবে। এরপর তিনি আপনাকে বিয়ে করতে পারবেন।

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, প্রথম স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকা অবস্থায় স্ত্রী যদি আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে দ্বিতীয় বিয়ে আইনত অবৈধ, অকার্যকর ও বাতিল বলে গণ্য হবে। স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইলে অবশ্যই তাঁকে আগে প্রথম স্বামীর সঙ্গে যথাযথ আইন মেনে বিবাহবিচ্ছেদ করতে হবে। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রথম স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানপূর্বক ৯০ দিন ইদ্দত পালন শেষে তালাক কার্যকর হয়। এই আইনগত বিধান মেনে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা যেতে পারে।

এই বিধান লঙ্ঘন করে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় স্ত্রী যদি অন্য কাউকে বিয়ে করেন, সে ক্ষেত্রে প্রথম স্বামী সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে স্ত্রী ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারেন। সেই সঙ্গে জরিমানাও হতে পারে। তবে স্ত্রী যদি তাঁর আগের স্বামীর সাত বছর ধরে কোনো খোঁজখবর না পান, অথবা তিনি জীবিত থাকতে পারেন, এমন কোনো তথ্য যদি জানা না যায়, তাহলে পরবর্তী স্বামীকে সত্যি ঘটনা জানিয়ে তাঁর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন। এটি দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারার বিধানের ব্যতিক্রম আর এই ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে শাস্তিযোগ্য হবে না।