আমার বউ অনেক কাজ করে!

অনেকে মনে করেন, ঘরের কাজ কোনো কাজই না। আসলে িক তাই? একদিন করেই দেখুন না। কাজগুলো ছোট, তবে সব মিলিয়ে পরিশ্রম িক কম?
সন্তান লালন-পালন, সংসার সামলানো, বাজারঘাট করা, শ্বশুর-শাশুড়ির যত্নআত্তি, মেহমানদারি—এসব িক কম পরিশ্রমের কাজ? বউয়েরা আসলে অনেক কাজ করে। এটা স্বীকার না করে উপায় নেই। অস্বীকার করতে চাইও না। বিবেকে বাধে। সবই তো নিজ চোখেই দেখি। চোখের দেখাকে অস্বীকার করি কীভাবে?
তবে নারীর পরিশ্রমের স্বীকৃতি কোথায়? কতটুকু স্বীকৃতি তাঁরা পান। একটু প্রশংসা করলে দোষ কোথায়? দশ পদ রান্না করলে একটু এদিক-সেদিক হতেই পারে। দশটা কাজ করলে সব কাজের মান সমান হবে—এমন কোনো কথা নেই। তাই বলে পাড়া মাথায় তোলারই বা কী দরকার? বউয়ের পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্যটুকু দিতে হবে। দেওয়ার সময় এসেছে। একটু প্রশংসা তাকে উৎসাহ জোগাবে। তার কাজের মান বাড়াতে সাহায্য করবে।
বউয়ের দোষের শেষ নেই। এটা ভালো না। ওটা এমন করল কেন? এমন কথায় কান দেনই বা কেন? এসব শুনে হইচই করবেন কেন? সত্যিটা যাচাই করে নিলেই হয়। কথা যে বা যাঁরা ছড়াচ্ছেন—হতে পারে শাশুড়ি বা ননদ।
বউ তো মানুষ। ভুল তার হতেই পারে। বরং না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। আদুরে গলায় ভুলটা ধরিয়ে দিলেই তো হয়। পাড়া মাথায় তুলে লাভ নেই; বরং ক্ষতিই হচ্ছে। এ ধরনের ঝগড়া সন্তানের জন্য ক্ষতিকর। বুঝেও অবুঝের মতো কাজ করবেন কেন? কর্মজীবী নারীর কথা ভেবে দেখুন। সংসার-কর্মক্ষেত্র দুটো সামলানো সহজ কাজ নয়। সহযোগিতার হাতটা বাড়ালে কী হয়? কখনো তাঁর কষ্টগুলো অনুভব করেছেন? কতটুকু তাঁকে নিয়ে ভাবেন? মনের সঙ্গে মনের মিলটা শক্ত তো? বোঝাপড়াটা কেমন? নাকি কোনো রকম চলছে। সংসারের গাঁথুনিটা যেন নরম না হয়ে যায়। সম্পর্কের প্রতি যত্নবান হতে হবে। একে অপরকে ভাবতে হবে। নচেৎ কখন যে সব একঘেয়ে হয়ে যাবে। এক ছাদের নিচে, তারপরও কতই না দূরত্ব। এমনটা অবস্থা কাম্য নয়। পরিবারকে হেলা নয়, গুরুত্ব দিন। বউয়ের দোষটা থাক না নিজের কাছে। বন্ধুর কাছে বলবেন। ছোট তো আপনিই হয়ে গেলেন। আপনারও তো দোষ আছে। এটা ভুলে গেলেই বিপদ। বউ অনেক কাজ করে—এই সত্যটা স্বীকার করার এখনই সময়।
বনানী, ঢাকা।