আম্মু, তোমাকে খুব মিস করছি

জানো মা, এখন সারা দিন কাজ করি। এক কাজ শেষ হলে আরেকটা কাজ খুঁজতে থাকি। এখন কিছু বলবে না? এখন টই টই করে ঘুরে জ্বর আসেনি, আম্মু। কাল থেকে টনসিলের ব্যথায় ভুগছি। হয়তো সেই ব্যথা থেকেই জ্বর আসছে। জানো আম্মু, দেহের ভেতরে যে আর একটা দেহ আছে, সেই দেহ এখন থর থর করে কাঁপতে থাকে। আম্মু, আজ তোমার কথা মনে করে অনেক কেঁদেছি। এখনো চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। বিশ্বাস করো আম্মু, আমি কাঁদতে চাইনি। এখন আগের থেকে অনেক পাষাণ হয়ে গেছি। বিশ্বাস করো আম্মু, তবু চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। জানো আম্মু, আজ জ্বর জ্বর নিয়েই অনেক কাজ করেছি। কী করব বল, সব সময় তো আর কাজ জোটে না। আজ সকালে হালকা কিছু নাশতা করেছি। খেতে পারি না, না খেলে যে কাজও করতে পারব না। দুপুরে কিছু খাইনি। কয়েকজনে খেতে বলেছে। খেতে পারি না। তোমার মতো কেউ বলে না যে ‘কী খাইবি? ঝাল পিঠা বানাইয়া দিমু? নাকি অন্য কিছু খাবি? না খেলে যে শরীর আরও খারাপ করবে।’ তোমার মতো কেউ অভয় দেয় না যে, ‘এইটুকু খেয়ে ওষুধ খাও, দেখবা কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বর ভালো হয়ে যাবে।’
আম্মু, তোমাকে খুব মিস করছি।
আম্মু! ও আম্মু,
তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। গত পরশু তোমাকে স্বপ্নে দেখেছি। মনে পড়লে প্রচণ্ড কান্না পায়, তাই ভুলে থাকতে চেষ্টা করি। তবু মাঝে মাঝে প্রচণ্ড কান্না করি। জানো আম্মু, সবার থেকে লুকিয়ে কান্না করি। কেন জানো? কেউ যদি তোমায় বলে দেয়, তাহলে তো তুমিও কাঁদবে। আমি জানি, আমার জন্য তুমিও খুব কাঁদো। তবু না জানার অভিনয় করে ভুলে থাকি।
বিশ্বাস করো আম্মু, চোখ দিয়ে যে এত অশ্রু ঝরতে পারে, প্রবাসে আসার আগে জানতাম না। অনেকের কাছে শুনতাম, বিশ্বাস করতাম না।
খুব কান্না পাচ্ছে, আর লিখতে পারছি না।
আম্মু, তুমি কিন্তু আমার জন্য কাঁদবে না। আমিও আর কাঁদব না।
ভালো থেকো আম্মু।
সুজন আহমেদ
মক্কা, সৌদি আরব।