আলোকিত হয়ে ওঠার অপেক্ষায় থানচি

অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। আলোকিত হয়ে ওঠার দিন গুনছেন বান্দরবানের থানচি উপজেলার বাসিন্দারা। ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শুধু উদ্বোধন বাকি। ইতিমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
থানচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা বলেন, ‘থানচি উপজেলা কয়েক দিনের মধ্যে আলোকিত হয়ে উঠবে। বদলে যাবে মানুষের জীবনযাত্রা। নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি হবে। স্বাধীনতার পর ৪৬ বছর ধরে উপেক্ষিত মানুষের অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে।’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চিম্বুক চূড়া থেকে থানচি উপজেলায় ৫৫ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ৩৩ কেভির সঞ্চালন লাইন থেকে সংযোগ নিয়ে বলীপাড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার জন্য ১১ কেভি একটি উপকেন্দ্রও নির্মাণ করা হয়েছে। এই বিতরণব্যবস্থার আওতায় পুরো থানচি উপজেলায় বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী নুরুল আলম বলেন, ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সময় পাওয়া গেলে যেকোনো সময় উদ্বোধন করা হবে।
থানচি উপজেলা সদর ও বলীপাড়ার বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুতের সংযোগ চালু হলে অনেক সুযোগ তৈরি হবে। হাঁস-মুরগির খামার ও মাছ সংরক্ষণ সহজ হলে মৎস্য খামার গড়ে উঠবে। কারণ, এখানে এসবের সম্ভাবনা রয়েছে। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখাও সহজ হবে।
বলীপাড়ার বাসিন্দা মংশৈ রায় মারমা জানান, বিদ্যুৎ–সংযোগ পেলে তিনি কলাগাছের আঁশে হার্ডবোর্ড তৈরির একটি কারখানা করবেন।
তবে থানচির ঠিকাদার নুমং প্রু মারমা বলেন, সবাই বিদ্যুৎ পাওয়ার অপেক্ষায় উদগ্রিব হলেও মানুষ বিদ্যুৎ–সংযোগ নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। এ জন্য সবাই বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু কেউ আবেদন করছেন না। তাঁরা মনে করছেন বিদ্যুৎ এমনিতেই দেওয়া হবে। এ জন্য প্রচারণা ও আবেদন ফরম সহজলভ্য করা দরকার।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবানের বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গণি বলেন, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে না জানায় এখনো আবেদন খুবই কম পড়েছে। মানুষকে জানানোর জন্য উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের কাছে আবেদন ফরমও সরবরাহ করা হয়েছে। কেউ জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ নিতে আগ্রহী হলে উদ্বোধনের আগেও তঁাদের সংযোগ দেওয়া হবে।