আসতে পারেন 'হোম ডেলিভারি'তে

তরুণদের আগ্রহের শীর্ষে আছে ‘হোম ডেলিভারি’র কাজ l ছবি: পিৎজা হাট
তরুণদের আগ্রহের শীর্ষে আছে ‘হোম ডেলিভারি’র কাজ l ছবি: পিৎজা হাট

অর্ডার দিচ্ছেন অনলাইনে, ই-মেইলে কিংবা ফোনে, পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। একজন ক্রেতার কাছে ব্যাপারটা খুবই উপভোগ্য। এতে তাঁর কষ্ট কমছে, ঘরে বসেই বুঝে নিচ্ছেন অর্ডার করা পণ্য। পণ্য হাতে পেলেই টাকা (পেমেন্ট) দিচ্ছেন। কেনাবেচার আধুনিক সুবিধা এখন এমনই।
এটাই ‘হোম ডেলিভারি’ নামে পরিচিত। এভাবে এখন সবই কেনা যায়। জামাকাপড়, খাবার, বই, তরিতরকারি, গৃহস্থালির পণ্য ইত্যাদি। এসব কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন অনেকে। যাঁদের সবাই-ই প্রায় বয়সে তরুণ। খণ্ডকালীন, পূর্ণকালীন-দুভাবেই এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। ছাত্রাবস্থায়, এমনকি পড়ালেখা শেষ করেও এ কাজে জড়াচ্ছেন অনেকে। ভালো বেতনকাঠামো, সুযোগ-সুবিধা আর স্বাধীন কর্মপরিবেশ পাওয়ায় তরুণদের আগ্রহের শীর্ষে আছে ‘হোম ডেলিভারি’র কাজ।
এ ধরনের কাজে নম্র, কর্মঠ ও বিনয়ীদেরই সুযোগ বেশি। অভিজ্ঞতা না থাকলেও এ কাজ করা যায়। কাজে নামার আগে সব নতুন কর্মীর জন্যই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মনে করেন, এতেই তাঁরা দক্ষ হয়ে ওঠেন। কাজের আঙ্গিক, ধরন ও বিষয় সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন।
ট্রান্সকম ফুডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আক্কু চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে হোম ডেলিভারিতে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা অনেক বেশি ভদ্র এবং সব ধরনের যোগাযোগে পারদর্শী। তাঁরা যথেষ্ট উপস্থাপনযোগ্য। তাঁদের প্রত্যেককেই প্রতিষ্ঠান থেকে মোটরসাইকেল দেওয়া হয়। এ জন্য অবশ্যই তাঁদের মোটরসাইকেল চালনায় দক্ষ এবং ব্যক্তিগত ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। নারী-পুরুষ যে-ই হোন, সবাই-ই সমান সুযোগ নিয়ে শৃঙ্খলা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন। কর্মীদের সুস্থতার প্রতিও আমরা নজর রাখি। নির্দিষ্ট বেতনের পাশাপাশি বিশেষ ছুটি ও ভাতার ব্যবস্থাও আছে তাঁদের জন্য।’
হোম ডেলিভারির কাজে সর্বনিম্ন যোগ্যতা হিসেবে লাগবে উচ্চমাধ্যমিক পাসের স্বীকৃতি। তবে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্নাতক পাস চাওয়া হয়। ছাত্রাবস্থায়ও এ কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে। প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত মোটরসাইকেল অথবা বাইসাইকেলে চড়ে নির্দিষ্ট পোশাক পরেই চলবে এ কাজ। এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে অফিস ব্যবস্থাপনা, হেল্পলাইন, অনলাইন মিডিয়া এবং পণ্য ব্যবস্থাপনায় রয়েছে নানা পদে কাজের সুযোগ।
ই-কুরিয়ার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিপ্লব ঘোষ বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন, পূর্ণকালীন-দুভাবেই কাজের সুযোগ আছে। কর্মীদের বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী। সবাই সাইকেলে চড়েই পণ্য পরিবহন করেন। গ্রাহকদের সুবিধার্থে আমরা চালু করেছি ‘ই-কুরিয়ার ডেলিভারি অ্যাপ’ (মোবাইল)। অ্যাপটির মাধ্যমে গ্রাহক পণ্য সম্পর্কে সব রকমের খোঁজখবর নিতে পারবেন। ই-কুরিয়ারের কর্মীদের বেতনকাঠামো যথেষ্ট ভালো। এখানে অনেক নারীও স্বচ্ছন্দে কাজ করছেন।’
রকমারি ডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘অনেকে হোম ডেলিভারির কাজটাকে ছোট করে দেখেন। প্রথমেই এ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। সব কাজই সমান। আগ্রহটাই বড় কথা, পাশাপাশি প্রয়োজন সাবলীল বাচনভঙ্গি। তবেই এ কাজে ভালো করা সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা থাকতে হবে। হোম ডেলিভারির কাজে পারিশ্রমিকও সন্তোষজনক।’
‘হোম ডেলিভারি’ করে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম স্বপ্ন, কেএফসি, চালডাল ডটকম, রকমারি ডটকম, পিৎজা হাট, ই-কুরিয়ার লিমিটেড এবং প্রায় সব অনলাইন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। হোম ডেলিভারি ব্যবস্থায় পণ্য হস্তান্তরের আগে সেটি সংরক্ষণের সব দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের। ফলে এ কাজে আস্থার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ই-কুরিয়ারের হেল্পলাইন কর্মী শায়লা ইমু বললেন, ‘হেল্পলাইন ছাড়াও ই-কুরিয়ারের অনলাইন হালনাগাদ (আপডেট) এবং গ্রাহকসেবার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছি। ই-কুরিয়ারে আছি প্রায় এক বছরেরও বেশি সময়। এখানকার কর্মপরিবেশ খুবই ভালো। ভিন্নধর্মী কাজ হওয়ায় এগুলো করে বেশ আনন্দ পাই। বেতনও সম্মানজনক।’
হোম ডেলিভারির কাজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেই লোক নেওয়া হয়। নিয়োগগুলো পাওয়া যাবে চাকরিবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট (প্রথম আলো জবস, বিডি জবস ইত্যাদি), প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ এবং পত্রিকার মাধ্যমে। বছরের প্রায় সব সময়ই চলে নিয়োগ কার্যক্রম।