
ফটিকছড়ি উপজেলা সদর থেকে সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ৫ দশমিক ৯ কিলোমিটারের আলী আকবর সড়কটি পাকা করার দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে সড়কটির একাংশ পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাজ চলে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এর মধ্যে সড়কে ইটের খোয়া ফেলে পিচঢালাইয়ের উপযোগী করা হয়। কিন্তু গত ছয় মাস ধরেই কাজ বন্ধ। ফলে ইটের খোয়ার ওপর পথ চলতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কিছু স্থানে ইটের খোয়া উঠে গেছে। হাঁটার সময় পায়ের তলায় পড়ছে খোয়া। প্রায় সময় হোঁচট খেয়ে পড়ছেন লোকজন। গাড়িতেও চলতে হচ্ছে ঝাঁকুনি খেতে খেতে।
সুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহফুজ উল্লাহ চৌধুরী জানান, উপজেলার সুন্দরপুর, এককুলীয়া ও হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের মানুষ কম সময়ের মধ্যে উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করতে পারে এই সড়ক দিয়ে। আগে মাটির সড়কে মানুষজন কষ্ট করে হলেও যাতায়াত করতে পারত। কিন্তু খোয়া ফেলে রাখার পর ওই সড়ক দিয়ে আর চলাচল করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া আগে চলাচলের জন্য রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাও পাওয়া যেত। এখন যানবাহন চলাচল এক প্রকার বন্ধই হয়ে গেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ওই সড়কের ১ হাজার ২০০ মিটার পাকা করার দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ৪২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার কাজটি পায় ‘মেসার্স ফাইন বিক্স ম্যানুফ্যাকচারার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদার ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল কার্যাদেশ পেয়ে ওই সড়কের বিবিরহাট সদর থেকে কাজ শুরু করেন। ইটের খোয়া আর বালু ফেলে সেগুলো রোলার দিয়ে শক্ত করার পর রোলার নষ্ট হয়ে যায়। এরপর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতি বছরের অক্টোবরে কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ। এর মধ্যে এলজিইডির পক্ষে ঠিকাদারের কাছে বারবার তাগাদা দিলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।
সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুল আজম জানান, বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছেন। কিন্তু সুরাহা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদার মো. ছরোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সড়কের কাজ ৫০ শতাংশ করার পর এলজিইডির দেওয়া একমাত্র রোলারটি নষ্ট হয়ে যায়। এসব তারা দেখভাল করার কথা। সড়কটিতে আমার অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। তারপরও দ্রুত রোলার পাওয়া গেলে ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব।’
উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বর্ষার জন্য কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। বর্তমানে আমাদের হাতে যে রোলারটি রয়েছে তা আবার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কেউ কাজ করতে পারছেন না। ঠিকাদারকে বলেছি ভাড়ায় চালিত রোলার এনে কাজ করতে।’ তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।