ঈদ রাঙাতে মেহেদি

কেনাকাটা শেষ, এবার দুহাত মেহেদিতে রাঙানোর পালা। মডেল: সাফা কবীর  সাজ: রেড পোশাক: নগরদোলা ছবি: সুমন ইউসুফ
কেনাকাটা শেষ, এবার দুহাত মেহেদিতে রাঙানোর পালা। মডেল: সাফা কবীর সাজ: রেড পোশাক: নগরদোলা ছবি: সুমন ইউসুফ
কালো মেহেদিও চলছে এবার। মডেল: অন্তরা
কালো মেহেদিও চলছে এবার। মডেল: অন্তরা

ঈদের আনন্দের সঙ্গে মেহেদি রাঙা হাত নেই, সেটা ভাবতেই যেন অপূর্ণতায় ম্লান হয়ে আসে উৎসবের উচ্ছ্বাসটা। বছর ঘুরে একেক সময়ে মেহেদির নকশাতেও আসে পরিবর্তন। অনেক আগে মেহেদি পাতা গাছ থেকে ছিঁড়ে তা বেটে তৈরি করা হতো হাতে লাগানোর উপযোগী করে। নকশা করতে ব্যবহার করা হতো কাঠি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তন এসেছে মেহেদির নকশায়, সেই সঙ্গে মেহেদি পাওয়া যাচ্ছে টিউবে। রাঙানো যাচ্ছে হাত
যেমন খুশি তেমনভাবে। রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভিন মনে করেন, যেহেতু হাতে মেহেদি দেওয়ার পর বেশ কিছুদিন সেই রং থাকে, তাই মেহেদির নকশা হতে হবে আকর্ষণীয়। এবার দুই ধরনের নকশার চল থাকবে। ছোট ছোট মোটিফে একটু হালকা নকশা যেমন চলবে, তেমনি অনেকে দুই হাত ভরে ঘন করেও মেহেদি লাগাবেন। সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই মানিয়ে যাবে হালকা নকশার মেহেদি। নখ বাদে নখের

.
.

চারপাশে গোল নকশায় লাগানো হচ্ছে মেহেদি। হাতের তালুতে থাকছে ছোট ছোট মোটিফের নকশা। পুরো হাত ভরে মেহেদি লাগাতে চাইলে আবার নকশার ধরন ভিন্ন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিন ধরনের মোটিফের কথা বললেন তিনি—ময়ূর, কলকা ও ফুলেল। পছন্দমতো একটি মোটিফ মাথায় রেখে পুরো হাত সাজানো যায়। তবে এই তিন রকম মোটিফ একসঙ্গে ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন তিনি।
মেহেদির সঙ্গে নখে কেমন নেইলপলিশ ব্যবহার হচ্ছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাদা নেইলপলিশ বেশ ভালো মানায় গাঢ় লাল মেহেদির সঙ্গে। ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিওরও করিয়ে নিতে পারেন। অনেকে নানা নকশার নেইল আর্ট করতে পছন্দ করেন। তবে সেটা যেন মেহেদির সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে না ওঠে।
মেহেদির রংটা আরও বেশি লাল করার জন্য মেহেদি ওঠানোর পর ব্যবহার করতে পারেন চিনি ও লেবুর রস। এ ক্ষেত্রে চিনি ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে হাতের ওপর রেখে শুকালেই কাজ হবে। রংটা যেন দ্রুত চলে না যায়, সে জন্য সাবান ও পানি কম কম ব্যবহারের পরামর্শ দেন আফরোজা পারভিন। বাজারের মেহেদিতে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ মেশানো থাকে, যার প্রভাবে অ্যালার্জি হতে পারে। এটি এড়াতে ল্যাকটোক্যালামাইন ব্র্যান্ডের লোশন ব্যবহার করে তার ওপর মেহেদি লাগাতে পারেন। শিশুদের হাতে মেহেদি দেওয়ার আগে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। হাতে সামান্য মেহেদি লাগিয়ে দেখতে পারেন, কোনো সমস্যা না হলে বাকিটা লাগান।
পারলারগুলোয় মেহেদি দিতে খরচ পড়ছে বিভিন্ন রকম। শিশুদের মেহেদির জন্য খরচ পড়তে পারে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। ঘন নকশায় দুই হাত ভরে মেহেদি লাগালে খরচ পড়তে পারে ২০০০ থেকে ৪০০০ টাকা। এ ছাড়া হালকা নকশায় চেইনের মতো করে এক হাতে মেহেদি দিতে পারেন। এক হাতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা লাগতে পারে। হাতের মাঝখানে দুই পিঠে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কনুই থেকে হাতের আঙুল (দুই পাশ) ১০০০ থেকে ১৬০০ টাকা লাগবে।

.
.

ফেসবুকে নানা পেজের মাধ্যমে মেহেদি লাগাচ্ছেন অনেকে। মেহেদি শৈলী পেজটির পরিচালক কাজী নাতাশা জানান, ঈদের সময়ে বিয়ের কনের সাজের মতো করে মেহেদি না দেওয়াই ভালো। পুরো হাতে একটু ফাঁকা ভাব রেখে হালকা নকশার মেহেদির এখন বেশ চাহিদা।
কথা হলো বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া বৃষ্টির সঙ্গে। ভালো মেহেদি দেন বলে সুনাম আছে তাঁর। চাঁদরাতে তাঁকে ঘিরে জমে ওঠে প্রতিবেশী-বন্ধুদের ভিড়। আর পরিবারের শিশুরা তো আছেই। তিনি জানান, বাচ্চাদের হাতের ক্ষেত্রে ছোট করে হালকা ডিজাইনই করেন তিনি। এবারও তা–ই করবেন। আর বড়দের জন্য ছোট ছোট নকশা দিয়ে পুরো হাত ভরে দেবেন অথবা শুধু হাতের এক পাশ থেকে আঙুল পর্যন্ত নকশা করবেন।
বাজারে টিউব মেহেদিগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে।