ওই বর এল রে
বরের সাজে যোগ হচ্ছে নিত্য নতুন বিষয়।
ভারী কাজের শেরওয়ানি, মাথায় পাগড়ি, পায়ে চকচকে নাগরা—বিয়েতে বরের সাজ যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। আগে হয়তো শুধু শেরওয়ানির দিকেই নজর দেওয়া হতো। দোকানে গিয়ে কোনোমতে পছন্দ হয়েছে, তো নিয়ে নাও। এক দিন পরবে, এত বাছবিচারের কী আছে। তবে এখন ছোট থেকে ছোটতর বিষয়ের দিকেও খেয়াল রাখেন বর। বনেদিয়ানা আর আধুনিক, বরের সাজে দেখা যাচ্ছে দুই ধরনের সাজই।
নকশার এই প্রতিবেদনের জন্য ছবি তোলার সময় পাগড়ি বাঁধছিলেন ডিজাইনার এমদাদ হক। পাগড়ি বাঁধার পর বরের সাজে সজ্জিত মডেলের মাথায় টিকলি লাগাচ্ছিলেন এমদাদ হক। তিনি বললেন, ‘যেকোনো জিনিসই কাজে লাগানো যায়। এটা আমার স্ত্রীর বিয়ের টিকলি। নিজে নকশা করে বানিয়েছিলাম। ২৫ বছর আগের ছোট একটি টিকলি এ যুগের বরের মাথায় সেজে উঠল নিজের মতো করেই।’
বরের সাজে অলংকার থাকবে কি থাকবে না, এ নিয়ে এখনো দেখা যায় নানা মতভেদ। গলায়, হাতে, কিংবা পাগড়ির ওপর অলংকার থাকতেই পারে। আপনি কীভাবে বহন করছেন, সেটাই মুখ্য। যেটুকুতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেটুকুই পরতে পারেন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে। এমদাদ হক জানালেন, বরেরা এখন অলংকার পরছেন, বিশেষ করে গলায়। অনেক বিয়েতেই দেখা যাচ্ছে মুক্তা, পুঁতি, হীরা কিংবা গার্নেট বসানো মালা পরছেন বর।
উত্তরীয় বরের পোশাকের আরেকটি সাজ অনুষঙ্গ। পাতলা একটি উত্তরীয় পরার দিন শেষ। বরং ভারী, কাজ করা উত্তরীয় প্রশংসা পাচ্ছে বরের সাজপোশাকে। বেনারসি, মসলিন কিংবা ডুপিয়ানের তৈরি হতে পারে। অবশ্যই লম্বা হতে হবে, নানাভাবে হাতের ওপর সাজিয়ে নিতে সুবিধা হবে। এমদাদ হক দুটি উত্তরীয় দিয়ে সাজিয়েছেন বরকে। একটা জমকালো, আরেকটা একটু কম জমকালো। বেনারসির সঙ্গে মানাবে মসলিন কিংবা ডুপিয়ান।
মজার বিষয় হচ্ছে, পাগড়ি বাঁধতে ১২ হাত দৈর্ঘ্যের শাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। পরে আবার সহজেই শাড়ি হিসেবে পরে ফেলা যাবে। নরম সুতি, মসলিন, জামদানি নানা ধরনের কাপড় পেঁচিয়ে নানা ঢঙে পাগড়ি বাঁধতে পারেন। কোমরে কাপড়ের তৈরি মোটা কোমরবন্ধ পরা যায়। নতুনত্ব আসবে সাজপোশাকে।
শেরওয়ানি পছন্দ করার সময় বরের গায়ের রং বুঝে শেরওয়ানি বেছে নিতে হবে। ভিন্নতা আনবে ভিন্ন কাটের পাঞ্জাবির ওপর খাটো শেরওয়ানি। অনেক বর কনের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে শেরওয়ানি বেছে নিচ্ছেন। অনেক সময় আবার শুধু বর–কনের পোশাকে সামঞ্জস্য দেখা যায়। রং এগিয়ে থাকে এখানটায়। কনের পোশাক হয়তো লাল। সেই লালের ছিটা গিয়ে পড়ছে বরের পাগড়ি বা উত্তরীয়তে। মন্দ নয় বিষয়টি।
এই সময়ে বরের পোশাকে জমকালো ভাবটা একটু কম দেখা যাচ্ছে। বদলে আরাম, আধুনিকতার দিকটাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। এমদাদ হক বললেন, ‘বরের সাজপোশাক যেমনই হোক, সেটি যেন জবরজং না লাগে। বিশেষ করে বাড়তি কিছু করতে গিয়ে বরের মধ্যে যেন জবুথবু ভাবটা চলে না আসে।’
সবকিছুর পর বিয়ের অনুষ্ঠানটিতে বেছে নিন আপনার পছন্দমতো সাজপোশাক। পোশাকে ফুটে উঠুক আপনার স্বাচ্ছন্দ্য আর আনন্দ।