
দিন কিংবা রাত, যেকোনো সময়ের বৃষ্টির জন্য এখন প্রস্তুত থাকতে হবে। বাড়ির ভেতরে থাকলে বৃষ্টি সব সময়ই উপভোগ্য। রাস্তায় থাকলে সামলাতে হয় পানি আর কাদা। জুতার ওপর দিয়ে বিশাল ধকল যায় এ সময়। পানিনিরোধক জুতা পরাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। বাজারেও রয়েছে বৃষ্টিদিনের উপযোগী নানা জুতা। বাজার ঘুরে তারই এক ঝলক দেওয়া হলো এখানে।

বৈচিত্র্যময় নকশায় বর্ষার জুতা বা স্যান্ডেলে পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। বৃষ্টি ও কাদামাটির কথা চিন্তা করে নকশায় আনা হয়েছে কিছুটা ভিন্নতা। অন্য সময়ের চেয়ে এই সময়ে জুতার উপকরণগুলোতে চামড়া তুলনামূলক কম ব্যবহার করা হয়, যাতে পানিতে ভিজে নষ্ট না হয়। হাঁটার সময় পায়ে যাতে রাস্তায় জমে থাকা ময়লা পানি ও কাদা না লাগে, সে জন্য জুতা-স্যান্ডেলের সোল একটু উঁচু রেখেই তৈরি করা হচ্ছে। একই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য জুতার চারপাশের অংশ যেন ঢেকে থাকে, সেদিকেও নজর রেখে নকশা করা হয়েছে। এপেক্স সুজ লিমিটেডের হেড অব লেদার কেমিক্যালস মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘জুতার উদ্ভাবন হয়েছিল মূলত মানুষের পায়ের নিরাপত্তার জন্য। তবে সময়ের পরিবর্তনে এটি এখন ফ্যাশনের একটি অংশ। মৌসুম ধরে জুতা তৈরি করা হচ্ছে এখন। বর্ষার এই সময় পানিনিরোধক এবং পিছলে যাবে না এমন জুতাগুলোই নির্বাচন করা উচিত।’

মেয়েদের বর্ষার জুতায় সামনের অংশ নৌকার ছইয়ের মতো ঢেকে দেওয়া। ওপরের অংশে নানা ধরনের মোটিফ ব্যবহার করা হচ্ছে। মেয়েদের জুতার রঙের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা। লাল, নীল, বাদামি, কালো, সবুজ, হলুদ, ছাই রং প্রাধান্য পাচ্ছে। চামড়া আর রেকসিনের মিশ্রণে একটু উঁচু হিল জুতাও রয়েছে। শিশুদের জুতা-স্যান্ডেল নকশা করে জুতা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বাহারি রং ও উপকরণ। জুতা-স্যান্ডেলে আঁকা হয়েছে কার্টুন চরিত্র। শিশুদের জন্য আরামদায়ক এই জুতা-স্যান্ডেলগুলোতে চামড়া ও কাপড়ের ব্যবহার নেই বললেই চলে।

বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করেন সাদিয়া আফরিন। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স বাটা শো রুমে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ফ্যাশনেবল ও আরামদায়ক কি না, এ দুটি বিষয়ের ওপরই প্রাধান্য দিই। বৃষ্টির সময় দেখি জুতা বৃষ্টিতে পরার উপযোগী কি না।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষার এই সময় কৃত্রিম চামড়া, রাবার, স্পঞ্জ, রেকসিনের জুতাই সহজলভ্য। বিভিন্ন আকারের গামবুটও জুতার দোকানে ক্রেতাদের খুঁজতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বৃষ্টির সময় পরার উপযোগী হিলবিহীন স্যান্ডেলের চাহিদাও বেশ ভালো।

কোথায় পাবেন
রাজধানীঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলা শহরে বর্ষার সময় বৃষ্টিতে পরার উপযোগী স্যান্ডেল ও জুতা পাওয়া যায়। ঢাকায় এলিফ্যান্ট রোড, গুলিস্তান, নিউমার্কেট, মৌচাক মার্কেট, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, মতিঝিল, স্টেডিয়াম এলাকা, ঢাকা কলেজের বিপরীতে, ফার্মগেটের ফুটপাতে বর্ষার জুতা পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া অ্যাপেক্স, বাটা, বে-এমপোরিয়াম, ক্রিসেন্ট, জেনিস, ওরিয়ানসহ ব্র্যান্ডের দোকানেও ব্যবহার করার উপযোগী জুতা ও স্যান্ডেল পাওয়া যাচ্ছে।
দামদর
ব্র্যান্ডেরশোরুমে ছেলেদের জুতা ৫৯০ থেকে ৪৫০০ টাকার মধ্যে। মেয়েদের জুতা পাবেন ৩৫০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে। ছোটদের জুতার দাম ২৫০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে। তবে যেকোনো শোরুমের চেয়ে ফুটপাতে দাম কিছুটা কম। সে ক্ষেত্রে ছেলেদের জুতার দাম শুরু ২৫০ টাকা থেকে। মেয়েদের স্যান্ডেলের দাম শুরু ২০০ টাকা থেকে। ছোটদের ১০০ থেকে ৭৫০ টাকার মধ্যে দাম পড়বে।