কুল খেয়ে রোগ প্রতিরোধ করুন

.
.

দেশি টক-মিষ্টি কুলের কথা মনে এলেই জিভে জল আসে। কিন্তু এখন দেশি কুল কোথায়। সর্বত্রই হাইব্রিড কুলের রাজত্ব। কিন্তু এক সময় নানা জাতের কুলের দেখা মিলত হাটে-বাজারে। বোল বরই নামের কুল তো এখন দেখাই যায় না। স্বাদ মেটাতে বাজারে আছে বাও কুল আর আপেল কুল। তাও মন্দ কী! এসব কুলেও আছে প্রচুর ভিটামিন আর খনিজ পদার্থ।
কুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ফলে এটি সংক্রামক রোগ যেমন টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বায় ঘা, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি দূর করে। কুলের রসকে ক্যানসার প্রতিরোধী হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ফলের রয়েছে ক্যানসার কোষ, টিউমার কোষ ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ ক্ষমতা। যকৃতের নানা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এই ফল। যকৃতের কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। কুল অত্যন্ত চমৎকার একটি রক্ত বিশুদ্ধকারক। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বরই খুবই উপকারী ফল। ডায়রিয়া, ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তশূন্যতা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগ খুব দ্রুত নিরাময় করে এই ফল। মৌসুমি জ্বর, সর্দি-কাশিও প্রতিরোধ করে কুল। এ ছাড়া হজম শক্তি বৃদ্ধি ও খাবারে রুচি বাড়িয়ে তোলে এ ফল।
বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই, সব ধরনের মাটিতে কুল জন্মে। এটি শুকিয়ে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। কাঁচা ও শুকনো কুল দিয়ে চমৎকার চাটনি ও আচার তৈরি করা যায়।
কুলের পুষ্টিগুণ: প্রতি ১০০ গ্রাম কুলে রয়েছে খাদ্যশক্তি-৭৯ কিলোক্যালরি, শর্করা-২০ দশমিক ২৩ গ্রাম, আমিষ- এক দশমিক দুই গ্রাম, জলীয় অংশ-৭৭ দশমিক ৮৬ গ্রাম, ভিটামিন এ-৪০ আইইএ, থায়ামিন-শূন্য দশমিক শূন্য দুই মিলিগ্রাম, রিবোফ্লোবিন শূন্য দশমিক শূন্য চার মিলিগ্রাম, নিয়াসিন শূন্য দশমিক ৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ৬-শূন্য দশমিক শূন্য ৮১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি-৬৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম-২১ মিলিগ্রাম, লোহা-শূন্য দশমিক ৪৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম-১০ মিলিগ্রাম, ম্যাংগানিজ-শূন্য দশমিক শূন্য ৮৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস-২৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম-২৫০ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম- তিন মিলিগ্রাম, জিংক-শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ মিলিগ্রাম।
পুষ্টিগুণের জন্য কুল তো খাবেনই। আরও একটা কারণে কুল খেতে পারেন, তা হলো এটি দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
লেখক: প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল।