কেঁচো নামের প্রাণীটিকে তাচ্ছিল্য করবেন না। এরা পৃথিবীর অনেক উপকার করে। তাই এদের সংরক্ষণও জরুরি।
সব বুনো প্রাণী আমাদের চোখে এক নয়। কেঁচোর তুলনায় গরিলা, বাঘ ও পান্ডার মতো প্রাণীগুলোকে আমরা সাধারণত বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। তাই এদের বাঁচিয়ে রাখার চিন্তাভাবনাও করি বেশি। কিন্তু প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য পরিবেশের ভারসাম্য বা বাস্তুসংস্থান জরুরি। এ ক্ষেত্রে মানুষের অস্তিত্বের স্বার্থেই অন্যান্য প্রাণীর টিকে থাকা দরকার।
কেঁচো পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রাণীর স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রকৃতিবিজ্ঞানীদের মতে, এই অমেরুদণ্ডী প্রাণীটির স্থান ডাইনোসরেরও ওপরে। কিন্তু কেন? মাটির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব প্রক্রিয়ায় এই প্রাণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলেই ‘প্রকৃতির লাঙল’ নাম পেয়েছে। এরা জৈব উপাদান ভেঙে মাটির উর্বরতা বাড়ায়। পাশাপাশি উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও পুষ্টি উপাদানের জোগান দেয়।
মাটির ভেতর দিয়ে চলাফেরার সময় কেঁচোরা মাটি ভাঙে এবং মেশায়। এতে মাটির উর্বরতা বাড়ে এবং বন্যা ও ভাঙন রোধ হয়। এ কারণে প্রাণীটিকে ‘মাটি প্রকৌশলী’ বলা হয়। তা ছাড়া এদের মাটির স্বাস্থ্য এবং বিষাক্ততা পরিমাপকও বলা চলে।
কেঁচোর নরম শরীর অন্যান্য প্রাণীর খাবার হিসেবে খুবই পুষ্টিকর। গবেষকেরা বলেন, কেঁচো পরিবেশ দূষণ রোধ করতে পারে। সিসার মতো ক্ষতিকর উপাদানের প্রভাব এরা মাটি থেকে দূর করে দেয়। সব মিলিয়ে বলা যায়, এই প্রাণী আমাদের ভূগর্ভস্থ বন্ধু।
পান্ডারা হারিয়ে গেলে সেটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার হবে। তবে পৃথিবীতে কেঁচো না থাকলে কী হবে? বিজ্ঞান বলছে, এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে। খাবারের অভাব দেখা দেবে, দূষণ বাড়বে এবং বন্যাও বেশি হবে।