চার ছক্কা হই হই...

৩ মার্চ দুপুর আড়াইটা। নগরের বিপণিবিতান এলাকায় এক তরুণীকে ঘিরে মানুষের ভিড়। সড়কের মোড়ে দাঁড়িয়ে নাচের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর সঙ্গে যোগ দিল কয়েকজন তরুণ। তাঁদের ঘিরে মানুষের জটলা বাড়তে থাকে। রাস্তায় যানবাহন চলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এমন সময় হঠাৎ বেজে উঠল, ’চার ছক্কা হই হই, বল গড়াইয়া গেল কই।’ এই গানের তালে তালে শুরু হলো তরুণ-তরুণীদের দৃষ্টিনন্দন নাচ। কারও বুঝতে বাকি থাকল না এটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে কোনো আয়োজন। উচ্ছ্বাস আর আনন্দ তাই ছড়িয়ে যায় উপস্থিত জনতার মধ্যেও।

মূলত এটি ছিল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একদল শিক্ষার্থীর পরিবেশনা। বিশ্বকাপ উপলক্ষে আইসিসি আয়োজিত ফ্লাশ মব নামের নাচ প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে এই নজরকাড়া পরিবেশনায় অংশ নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অফিসিয়াল থিম সংগীতে বৈচিত্র্য আনতে এবার এ গানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমধর্মী পরিবেশনা যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসি। বাংলাদেশের যে তিনটি শহরে খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের নাচতে দেখা যাবে গানের ভিডিওতে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট শহরগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফ্ল্যাশ মব নাচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে আইসিসি। আর এরই অংশ হিসেবে ফ্লাশ মব প্রদর্শন করেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

কেবল চুয়েট নয়, ফ্ল্যাশ মব প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন চট্টগ্রামের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। চুয়েট দলের পাশাপাশি একই দিন সকাল ১১টায় নগরের দুই নম্বর গেট এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফ্লাশ মব পরিবেশন করেন। এ ছাড়া পরদিন মঙ্গলবার ফ্লাশ মব অংশ নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আইসিসির তত্ত্বাবধানে নাচগুলো পরচালনা করছে ’গ্রে অ্যাড’ নামের একটি প্রতষ্ঠািন। গ্রে অ্যাডের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের সমন্বয়ক মুনতাসীর হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এই তিনটি শহরে খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই শহরগুলোর মোট ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে থেকে সেরা তিনটি দলের সমন্বিত পরিবেশনা বিশ্বকাপের থিম সংয়ের সঙ্গে আইসিসির নিজস্ব হোমপেইজে জায়গা করে নেবে। বিশ্বকাপের সময় ভিডিওটি দেখানো হবে স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে। এ ছাড়া সেরা তিনটি ভিডিও খেলার ফাঁকে ফাঁকে গ্যালারিতে বসে উপভোগ করতে পারবেন দর্শকেরা।

চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বনিয়তুল মুছাইয়াদা অংশ নিয়েছিলেন ফ্ল্যাশ মবে। অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট তরুণদের খেলা। তাই থিম সংগীতে তরুণদের নিয়ে আইসিসির এই উদ্যোগ। আমি এর আগে অনেক নাচে অংশ নিলেও ফ্ল্যাশ মব অনেক ভালো লেগেছে।’

যন্ত্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রুবায়েত আহমেদ বলেন, ‘এই নাচে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের উচ্ছ্বাস আমরা পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে পারব। এটা ভেবে খুবই ভালো লাগছে।’