চার বছর পর এল ব্যাচেলর দিবস
ব্যাচেলর! দৈনন্দিন যন্ত্রণা এবং স্বাধীনতার সুখ—একই সঙ্গে এমন দ্বিমুখী বৈশিষ্ট্যের একটি শব্দ যেন।
‘ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয় না’, বাড়ির ফটকে বাসা ভাড়ার সাইনবোর্ডে এই বাক্যের দিকে অসহায় তাকিয়ে থাকতে হয় নগরের উদ্বাস্তু ব্যাচেলরকে। নিঃসঙ্গ ব্যাচেলর ঘরে ফেরেন একা। ঘরের ফেরার জন্য কারও অপেক্ষায় থাকতে হয় না তাঁর। দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছে তাই খেয়ে, না খেয়ে। কিন্তু তাতে কী! এর ঠিক উল্টো পিঠেই রয়েছে মুক্ত বিহঙ্গের মতো জীবন। ইচ্ছে খুশি জীবনযাপন। জীবনের নাটাইটা বাঁধা নেই কারও কাছে। নেই জবাবদিহির যন্ত্রণা।
সংসার, সন্তান, বাজারসদাই, অফিস কিংবা রান্নাঘর—বিয়ের পরবর্তী চিত্রটা ভাবুন তো! থাক, ভেবে আর কাজ নেই। তার চেয়ে জম্পেশ আনন্দে উপভোগ করে নিন ব্যাচেলর থাকার সুখ। ও হ্যাঁ, আজ কিন্তু ‘ব্যাচেলর দিবস’। চার বছর পরপর ঘুরেফিরে আসে ২৯ ফেব্রুয়ারি। অথচ এমন একটি দিন কিনা পেল এমন একটি দিবসের স্বীকৃতি!
ব্যাপারটির সঙ্গে রয়েছে প্রাচীন আয়ারল্যান্ডের লোকগাথার যোগ। পঞ্চম শতাব্দীতে আয়ারল্যান্ডের কিলডার শহরের ধর্মযাজকের কাছে এই মর্মে অভিযোগ আসে যে পুরুষের প্রণয় প্রস্তাব পাওয়ার জন্য নারীদের অনেক বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যাজক প্যাট্রিক আইন জারি করে একটি দিন নির্ধারণ করেন। যেদিন নারীরা পুরুষদের বিয়ের প্রস্তাব দেবেন, সেই দিনটি ছিল ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখ। বেশ মজার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে পালিত হতো এই দিন। কোনো নারী কোনো পুরুষকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে পুরুষ যদি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতেন, তাহলে নিয়মানুযায়ী পুরুষটি ওই নারীকে একটি সিল্কের গাউন বা ফার কোট কিনে দিতে বাধ্য থাকতেন।
সময়ের বিবর্তনে তারিখটি যেমন ব্যাচেলর দিবসে রূপান্তরিত হয়েছে, তেমনি এটি উদ্যাপনেও এসেছে ভিন্নতা। আপনি যদি ব্যাচেলর হয়ে থাকেন, তাহলে অন্য ব্যাচেলর বন্ধুদের সঙ্গে মাস্তিতে কাটাতে পারেন দিনটি। দারুণ একটা সিনেমা দেখতে পারেন তাদের নিয়ে। বেড়াতে যেতে পারেন কাছে-দূরে কোথাও। তবে যদি অসুস্থ থাকেন, তাহলে ব্যাচেলর বন্ধুদের বাড়িতেই ডাকতে পারেন। আনন্দ-ফুর্তির পাশাপাশি বন্ধুর দল আপনার একটু সেবা–শুশ্রূষাই করে যাক নাহয়।
প্রাচীন প্রথাটাকেও আবার ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। আপনি যদি নারী হয়ে থাকেন, পছন্দের মানুষটিকে প্রস্তাবটা দিয়ে ফেলুন। জবাব নেতিবাচক হলেও দারুণ একটা উপহার কিন্তু পেতেই পারেন।
ডেইজ অব দ্য ইয়ার ডটকম অবলম্বনে কবীর হোসাইন