চা না কফি?

চা , কফি
চা , কফি

আমরা চা ও কফি দুই-ই পান করি। কিন্তু অনেক সময় ভাবি, কোনটি ভালো। এ বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক গবেষণাও হয়েছে। কফির অনেক গুণ। তবে চায়েরও কম নয়। কয়েক শ বছর আগে ব্রিটিশরা এ দেশে চা পান জনপ্রিয় করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে বলত, চায়ে অনেক উপকারিতা। ঠান্ডা জ্বর, মাথাব্যথা, গা-ব্যথা থেকে শুরু করে কলেরা পর্যন্ত ভালো করতে চায়ের জুড়ি নেই। তখন বিনা পয়সায় চা দেওয়া হতো, যেন মানুষ চায়ে অভ্যস্ত হয়। চায়ের উপকারিতা সম্পর্কে সেই সময়ের প্রচারে হয়তো অতিশয়োক্তি ছিল, তবে আধুনিক গবেষণায় চায়ের অনেক উপকারিতার কথা জানা গেছে।
১. চায়ের সঙ্গে যকৃতের (লিভার) ভালোমন্দ যাচাইয়ের জন্য আট লাখ ব্যক্তির ওপর এক গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, যাঁরা চা পানে অভ্যস্ত, তাঁদের মধ্যে লিভার সিরোসিস বা যকৃতের অন্যান্য অসুখ তুলনামূলকভাবে কম হয়। এর আগে ২০০৮ সালে পরিচালিত একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদনের (সিস্টেমেটিক রিভিউ) সঙ্গে এই জরিপে প্রাপ্ত ফলের যথেষ্ট মিল রয়েছে।
২. চা পানে বিষণ্নতা কমে। মেটা-অ্যানালাইসিস ২০১৫-এর ১১টি পর্যবেক্ষণে ২৩ হাজার ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। দেখা গেছে, দিনে প্রতি তিন কাপ চা পানে বিষণ্নতায় তুলনামূলক ঝুঁকি ২৩ শতাংশ কমে।
৩. চা পানে স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে। যাঁরা দিনে এক কাপেরও কম চা পান করেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা অন্তত তিন কাপ চা পান করেন, তাঁদের ঝুঁকি ২১ শতাংশ কমে। সম্প্রতি মেটা-অ্যানালাইসিস সাড়ে আট লাখ ব্যক্তির ওপর ২২টি সম্ভাব্য বিষয়ে পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করে দেখে, প্রতিদিন অতিরিক্ত আরও তিন কাপ চা পান করলে করোনারি হার্ট ডিজিজ বা হৃদ্রোগ ২৭ শতাংশ, হৃদ্রোগে মৃত্যু ২৬ শতাংশ, স্ট্রোক ১৮ শতাংশ, মোট মৃত্যুহার ২৪ শতাংশ, সেরিব্রাল ইনফার্কশন ১৬ শতাংশ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ২১ শতাংশ কমে।
৪. মেটা-অ্যানালাইসিস ২০১৪-এর ১৫টি প্রকাশিত পর্যবেক্ষণে পৌনে ছয় লাখ ব্যক্তির ওপর জরিপ চালানো হয়। দেখা গেছে, প্রতিদিন অতিরিক্ত দুই কাপ চা পানে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমে। উপরন্তু, গ্রিন টি পানে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
৫. তবে মনে রাখতে হবে, এসব হিসাব মূলত জরিপভিত্তিক। বাস্তব ও বিজ্ঞানসম্মত পর্যবেক্ষণে এসব জানা গেছে। এর দ্বারা একটির কারণে অপরটি ঘটছে বলে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যায় না।
সূত্র: দি নিউইয়র্ক টাইমস ৫ অক্টোবর ২০১৫