ছোটদের কাপড়ের বই

কাপড়ের বইয়ে থাকছে শিশুদের শিক্ষণীয় নানা বিষয়। মডেল: বারতি ও অররা, বই: টয়োময়
ছবি: সুমন ইউসুফ

এক বছর বয়সী সাম্যর সবকিছুই মুখে দেওয়ার অভ্যাস। বাদ যায় না বইও। বই তো আর নিয়মিত ধুয়ে পরিষ্কার করা দেওয়া যায় না। ফলে দুশ্চিন্তায় থাকেন তার মা–বাবা। এসব থেকেই তো ছড়াতে পারে জীবাণু। অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে সাম্য।

এদিকে দেড় বছর বয়সী লামিয়ার মা–বাবা চান সন্তানের হাতে খেলনার পাশাপাশি বইও থাকুক। কিন্তু লামিয়া সেটা উল্টেপাল্টে দেখার চেয়ে ছিঁড়তেই বেশি ভালোবাসে।

এসব সমস্যার একবাক্যের সমাধানের নাম ক্লথ বুক বা কাপড়ের বই। হাতে নিয়ে শিশু ছিঁড়তে পারবে না কোনোভাবেই, চাইলেই ধুয়ে পরিষ্কার করে তুলে দেওয়া যাবে ওর হাতে। আবার উজ্জ্বল রংটা প্রবলভাবে টানবে শিশুকে।

এই ধরনের বই হতে পারে শিশুর পছন্দের উপহার। বই : সোর্স

বই এবং শিক্ষামূলক খেলনা নিয়ে কাজ করা টয়োময় অনলাইন পেজের স্বত্বাধিকারী শাহীরা সুলতানা বললেন, ‘এই বইগুলো আমাদের দেশে এখনো তেমন প্রচলিত না হলেও বাইরের দেশে অনেক বেশি জনপ্রিয়। সেখানে বইকে শিশুর জন্য একটা খেলনা হিসেবেই বিবেচনা করেন মা– বাবা।’ ছোট থেকেই শিশুকে বই পড়ে শোনানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, এই আনন্দের কোনো বিকল্প নেই। বাবা বা মায়ের কাছে বই পড়া শুনতে শুনতেই তাদের গলার স্বরের সঙ্গে ছোট্ট শিশুর পরিচিতি হয়। এতে ওলটালে শিশুর সঙ্গে মা–বাবার দৃঢ় বন্ধন গড়ে ওঠে। এসব বই সে ক্ষেত্রে খুব উপকারী। রঙিন হওয়ায় শিশুর মধ্যে নানান ধরনের স্টিমুলেশন তৈরি হয়। কিছু কিছু কাপড়ের বইয়ে পাতা ওলটালে বিভিন্ন ধরনের শব্দও হয়, যে কারণে শিশুরা আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে।

ছোট থেকেই শিশুর হাতে তুলে দিতে পারেন এসব বই

একেবারে ছোট থেকেই শিশুর হাতে তুলে দিতে পারেন এসব বই। এসব বইতে বিষাক্ত নয় এমন (নন–টক্সিক) রং ব্যবহার করা হয়। ফলে শিশু মুখে দিতে চাইলে পরিষ্কার করে সেটা ওকে দেওয়া যায়। তাতে রং নষ্ট হওয়ারও ভয় থাকে না। সে জন্যই বইগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

দেশের বাইরে থেকেই বইগুলো সংগ্রহ করেছে টয়োময়। শিগগিরই টয়োময় থেকে বই বের করার পরিকল্পনা আছে তাদের, যেগুলো দেখে শিশুরা সহজেই নিজের চোখে দেখা জিনিসপত্রের সঙ্গে মেলাতে পারবে।

শিশুদের খেলনা ও উপকরণ নিয়ে কাজ করে কিডজ অ্যাকটিভিটি বুক। এর স্বত্বাধিকারী সুলতানা ইয়াসমিন বললেন, ১ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের মস্তিষ্ক উন্নয়নের জন্য অনেক ভালো এসব বই। এতে শিশুরা অনেক উৎসাহ পায়। ছোট থেকেই শিশুরা জুতার ফিতা বাঁধা, টিফিনের বক্স খোলা, বোতলের ঢাকনা খোলা, জামাকাপড় পরার মতো কাজে দক্ষতা বাড়াতে পারবে। এসব বই দিয়ে শিশুরা চুম্বক দিয়ে মাছ তোলা, বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও শিখতে পারবে। বইগুলোতে শিশুদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশে বিভিন্ন ধরনের খেলা, রং মেলানোর ব্যবস্থা আছে। তা ছাড়া বইগুলোতে যুক্ত আছে বর্ণমালাও। যাতে তারা খেলতে খেলতে শিখতে পারে। বইগুলো আমাদের দেশে পাওয়া যাচ্ছে। আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছালে তৈরি বা সংগ্রহের খরচটা আরও কমে আসবে বলেই মনে করছেন এই উদ্যোক্তারা। এসব বইয়ের দাম শুরু ১৭৫ টাকা থেকে, সর্বোচ্চ দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা।