ছড়া
এক পলকে
আহসান মালেক
বৃষ্টি পড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি
দূর পাহাড়ে—চন্দ্রঘোনা,
সুর করে সব ছড়া কাটে
দাওয়ায় বসে মৌলিসোনা।
চন্দ্রঘোনায় চাঁদের বাড়ি
চাঁদের আলো কে দেয় ঢেকে?
কয়লামুখো মেঘগুলো কী
চাঁদের মুখে বসল জেঁকে?
তাই না দেখে চাঁদের বুড়ি
হেই করে যেই উঠল হেঁকে,
এক পলকে বৃষ্টি ও মেঘ
যায় পালিয়ে একে একে!
লেপিডোপটেরা
চন্দনকৃষ্ণ পাল
লেপিডোপটেরা এক ধরনের কীট
তোমাদের সাথে প্রায়ই হয় তার মিট।
চোখ বুঝি হয়ে গেল বড় আর গোল?
বিষয়টা সহজ আর বড়ই নিটোল।
এদের শরীরে থাকে উজ্জল রং
ফুলে ফুলে উড়ে উড়ে করে কী যে ঢং!
ঢং বলা ঠিক নয়, তারা মধু খায়
এই ফুল থেকে ওরা ওই ফুলে যায়।
পুঞ্জচোখ থাকে তাদের মাথায়
নাম তবে লিখে রেখো তোমার খাতায়।
বেলনের মতো দশ খন্ডের দেহ
যা আমি বললাম বুঝেছ কি কেহ?
রেগে গেলে? ভাবছ তো কী আমার মতি?
প্রিয়জন, জেনো এটা হলো প্রজাপতি!
মেঘেদের চিঠি
ওমর কায়সার
ধরতে পারি না তাকে, সে আমাকে ছুঁয়ে যায়
তার ছোঁয়া পেয়ে ঘাস মাটিতেই শুয়ে যায়।
কেউ তাকে হাওয়া বলে, কেউ কেউ ডাকে বায়ু
তাকে ছাড়া নিভে যায় প্রাণীদের পরমায়ু।
কখনো কখনো মৃদু, আবার কখনো ঝড়
উড়িয়ে সে নিয়ে যায় গাছপালা বাড়িঘর।
গরমের কালে এসে মনপ্রাণ জুড়িয়েছে
হালকা বাতাসে কারা কত ঘুড়ি উড়িয়েছে?
নৌকার পালে লাগে কী মধুর সমীরণ
মাঝি ভাই গান গায়, হাসিখুশি তার মন।
জানালাটা খুলে রাখ, পবনেরা ঘরে এসে
মেঘেদের কিছু চিঠি দিয়ে যাবে ভালোবেসে।
(এই ছড়ায় বাতাসের আলাদা কয়েকটা নাম বা প্রতিশব্দ আছে। খুঁজে বের করো দেখি!)
একটা মজার গল্প শোনো
তানজিল রিমন
জানো আব্বু, হয়েছে কী?
কাল রাতে এক ছবি এঁকেছি
সেই ছবিতে ছিল একটা পুচকে কুমিরছানা
আজ সকালে দেখি, ওমা, নাচছে তাধিন তা না!
ঠিক দুপুরে বাসার সবাই ঘুমিয়ে যখন আছে
খাতা থেকে বেরিয়ে সে দাঁড়িয়ে আমার কাছে!
দেখে আমি ভয়েই জড়োসড়ো
কুমির ছানা হয়েই গেছে বড়
যখন আমি দৌড়ে চলে যাব
বলল, ‘আমায় বন্ধু তুমি ভাবো!’
জানাল সে হেসে
আমায় নিয়ে যাবে পানির দেশে
সেখানে সব দারুণ রঙিন, হাজার প্রাণের মেলা
সবাই স্বাধীন নিজের মতো, খেলছে হরেক খেলা
রঙ ছড়িয়ে নাচছে তারা, করছে ডাকাডাকি
আমি গেলে ওরা সবাই খুশিই হবে নাকি।
বললাম আমি, ওরে বোকা, সাঁতার তো নেই জানা
পানির দেশে ছোট্ট আমার নামতে আছে মানা
তুমি দেখি হওনি বড়, রয়েই গেছ ছানা
তারচে’ বরং খেলি এসো, মেলি দুজন ডানা!
ঠিক তখনই দরজা খুলে আম্মু এল ঘরে
কুমিরছানা দৌড়ে হলো হাওয়া
আমার নাকি হয়নি কিছু খাওয়া
ঘুম ভাঙিয়ে আম্মু আমায় নিয়ে গেল ধরে!
ছোট্ট মেঘ
শিবুকান্তি দাশ
মেঘটা ছিল অনেক দূরে
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে
নামতে ছিল মাটির কোলে
কিন্তু হঠাৎ পথটা ভোলে!
তাকিয়ে দেখে, একটা নদী
মেঘটা ভাবে—ডুবি যদি!
না না না, অন্য কোথাও
দেখল দূরে ছোট্ট এক গাঁও।
ছুটল এবার মেঘটা জোরে
নাওয়ের পালটা বেদম ওড়ে।
মেঘ উড়ে যায় মেঘ উড়ে যায়
দখিন হাওয়ায় সবুজ ছায়ায়
অনেক দূরের বটের ডালে
মেঘটা নামে সন্ধ্যাকালে।