
নানা প্রয়োজনেই আমাদের বাড়ির বাইরে যেতে হয়। গরমের এই সময়ে ঘরের বাইরে গেলে সঙ্গে পানি রাখা খুবই প্রয়োজন। তৃষ্ণা মেটাতে তো বটেই নাকমুখে পানির একটু ঝাপটা দিতে পারলেও গরমে বেশ স্বস্তি পাওয়া যায়। তাই পানি রাখার একটা সুন্দর জলপাত্র বা বোতল আপনার সঙ্গে রাখতে পারেন। শুধু বাইরে যাওয়ার সময়েই নয়, আপনার ঘরের খাবার টেবিলেও রাখতে পারেন রুচিশীল পানির বোতল।
বাজারে আছে নানা রকমের পানির বোতল। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় আরএফএল পণ্যের ডিলার জাবেদ আলম বলেন, ‘গরম বেশি পড়ায় পানির বোতলের চাহিদা বেড়ে গেছে। ক্রেতারা সাধারণত দেখতে সুন্দর এমন পানির বোতলই বেশি কিনছেন। তা ছাড়া পাতলা বোতলে পানি কতটা সময় ঠান্ডা থাকবে সে দিকেও তাঁদের নজর দিতে দেখা যাচ্ছে।’

তরুণেরা পানির বোতল কেনার আগে সেটি কতটা আকর্ষণীয় সেদিকে খেয়াল করেন বেশি। দোকানগুলোতেও তাই বিভিন্ন নকশার বোতলের দেখা মিলছে। রং, গড়ন আর গুণগত বৈশিষ্ট্যের বিচারে নানারকম পানির বোতলের চল রয়েছে এখন। রঙের দিক থেকে বিবেচনা করলে লাল, গোলাপি, হালকা সবুজ, গাঢ় সবুজ, বেগুনি, আকাশি নীল, হলুদ, বেবিকর্ন হলুদ, সাদা-কালো বা একাধিক রঙের মিশেল দেখা যাচ্ছে বোতলের গায়ে। কোনো কোনো বোতল নকশা করা। কোনোটা আবার একদম সাদামাটা। রং যেমনই হোক বোতলের আকৃতিই বদলে দিচ্ছে পুরো বোতলটিকে। বৈচিত্র্যময় গড়নের বোতলের মধ্যে আছে লম্বা, সরু, গোলাকার, ডিম্বাকার, মাঝ বরাবর খাঁজকাটা প্রভৃতি। বিভিন্ন ধরনের বোতলে আবার বিভিন্ন ধরনের ঢাকনা। বিশেষ করে চলতি পথে যে ধরনের ঢাকনা থাকলে পানি পানে সুবিধা হয়, তেমন করেই বানানো হচ্ছে বোতল। কোনো কোনো বোতলে ভাঁজ করে স্ট্র বসানো থাকে। ফিতাওয়ালা পানির বোতলও পাওয়া যাচ্ছে। প্লাস্টিকের বোতলের পাশাপাশি হালকা অ্যালুমিনিয়ামের বোতল রয়েছে বাজারে। তবে প্লাস্টিকের বোতল হলে সেটির মান বুঝে কেনা উচিত।
রাজধানীর বারডেম টু জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাহমিদা রহমান বলেন, ‘সাধারণত একজন মানুষের গড়ে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করা দরকার। গরমে তা আরেকটু বেশি। কারণ, রোদের কারণে ঘামের সঙ্গে প্রচুর পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই সঙ্গে পানির বোতল নিয়ে বাইরে যাওয়াই ভালো।’ প্লাস্টিকের বোতলে পানি রাখতে সমস্যা নেই। তবে সেটা যদি নিম্নমানের প্লাস্টিক হয়, তাহলে তা থেকে অনেক সময় পানিতে পলি কার্বনেট উইথ বিসফেনোল মিশে যেতে পারে, যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্লাস্টিকের বোতলে ১২ থেকে ২০ ঘণ্টার বেশি পানি জমিয়ে না রাখাই ভালো।

তবে, বাজারে এমন অনেক প্লাস্টিকের পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আছে, যারা এসব বিষয়ে খেয়াল রেখেই ভালো মানের প্লাস্টিক দিয়ে বোতল তৈরি করছে। অনেকেই রোদের মধ্যে ঠান্ডা পানি পান করতে চান। তাই অনেক ধরনের অ্যালুমিনিয়ামের বোতল আছে, যেগুলো ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি ঠান্ডা রাখে। এসব বোতলের মুখের দিকটা বিশেষ যত্ন নিয়ে তৈরি করা হয়। ব্যাগে ভরে রাখলে যাতে বোতল থেকে পানি না পড়ে সেটি দেখা হয়। আপনার যতটুকু পানি রাখার দরকার বাজারে সেই মাপের বোতলই পাবেন। ৫০০ মিলিলিটার থেকে দুই লিটার পর্যন্ত পানি রাখার বোতল আছে দোকানে।
দরদাম
পানির বোতলের উপাদান ও আকারভেদে দাম ঠিক হয়ে থাকে। সাধারণত ৫০০ মিলি প্লাস্টিকের বোতলের দাম ৪৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আবার এক-দুই লিটারের বোতলগুলো ১০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। পানি ঠান্ডা রাখার থার্মাল সুবিধাসহ বোতলগুলোর দাম আবার ২৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার বাজার ও রাস্তার পাশে ‘এক শ’...‘এক শ’ বলে ক্রেতাদের আকর্ষণ করা দোকানেও একদামে পাবেন বোতল। তবে অ্যালুমিনিয়ামের পানির বোতল হলে, দাম একটু বেশি পড়বে। ৩০০ থেকে শুরু করে এক হাজার টাকার মধ্যে কেনা যাবে এসব বোতল।
কোথায় পাবেন
যেকোনো তৈজসপত্রের দোকান, প্রাণ-আরএফএলের শোরুম, বেঙ্গল প্লাস্টিকের শোরুম এবং নিউমার্কেটে পানির বোতল মিলবে। পল্টন, সাত মসজিদ রোড, গুলিস্তান, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, মালিবাগ ও উত্তরার বিভিন্ন দোকানেও পানির বোতল পাবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতে পানির বোতল পাওয়া যায়।
