জাদুর মায়ায় মুগ্ধ দর্শক

শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্ত। হলজুড়ে পিনপতন নীরবতা। ফাঁদে আটকানো যুবকের গলা। ধারালো তলোয়ার চালিয়ে দেওয়া হলো গলায়। কোপ পড়ল বেশ কয়েকটা। কিন্তু না, যুবকের কিছুই হলো না। ভাবছেন অলৌকিক। আদতে সেটাই। জাদুর ছোঁয়ায় তলোয়ারের নিচে মাথা পড়েও অক্ষত যুবক।
গত শুক্র ও শনিবার নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ রকম একের পর এক জাদুতে বিমোহিত ছিলেন দর্শকেরা। দুদিনের জাদু উৎসব হয়ে উঠেছিল দেশি-বিদেশি জাদুকরের মেলা।‘চট্টগ্রাম মেগা ম্যাজিক ফেস্টিভ্যাল-২০১৩’-এর প্রতিটি প্রদর্শনীতেই ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়।
স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী ছোটন কুমার দাশ। তিনি বলেন, জাদু নিয়ে সন্তানদের উৎসাহ বেশি। তাই তাদের নিয়ে চলে এলাম। জাদু দেখে খুব খুশি তারা।
শুধু যে বড় জাদুকরেরা মাতিয়েছেন তা কিন্তু নয়, উৎসবের একটি প্রদর্শনী অধিবেশন পুরোপুরি ছিল তরুণ জাদুশিল্পীদের জন্য। এ ছাড়া প্রত্যেক প্রদর্শনীতেও বড়দের সঙ্গে জাদু প্রদর্শন করেন।
আয়োজক কমিটির প্রধান জাদুশিল্পী রাজীব বসাক বলেন, রংপুর থেকে আগত দুই শিশু জাদুশিল্পী তানজীম ও তানহার তাদের ব্ল্যাক আর্ট জাদুর মাধ্যমে চট্টগ্রামের দর্শকদের মন জয় করে নেন। জাদু শিল্পের দুরূহ শাখা ব্ল্যাক আর্ট খুব সাবলীলভাবে হলভর্তি দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করে তারা।
উৎসবে মোট তিনটি প্রদর্শনী হয়। বাংলাদেশ জাদুচর্চা কেন্দ্রের আমন্ত্রণে এবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৮০ জন, ভারত থেকে ছয়জন এবং ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে একজন করে জাদুশিল্পী এ উৎসবে অংশগ্রহণ নেন।
উৎসবের প্রথম দিন শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত প্রথম অধিবেশনে জাদু প্রদর্শনীতে তরুণ জাদুশিল্পীরা। দ্বিতীয় অধিবেশনে ছিল জ্যেষ্ঠ শিল্পীদের। সমাপনী দিনে জাদু প্রদর্শন করেন দেশ ও দেশের বাইরে থাকা আসা জাদুশিল্পীরা।
ভারতের জাদুশিল্পী সন্ময় গাঙ্গুলী বলেন, ‘জাদুর প্রতি চট্টগ্রামের মানুষের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ। দর্শকদের এ অনুপ্রেরণা আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করবে।’
জার্মানি থেকে বন্দরনগর চট্টগ্রামের এ উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন জাদুশিল্পী লুৎফর শেখ। তিনি বলেন, ‘সুযোগ পেলে আবার চট্টগ্রামে জাদু দেখাতে ছুটে আসব। দর্শকদের সাড়া দেখে আমরা অভিভূত।’
শুক্রবার বিশিষ্ট জাদুশিল্পী উলফাত কবির এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। আয়োজক কমিটির প্রধান রাজীব বসাক বলেন, ‘চট্টগ্রামের জাদুশিল্পীদের বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে এ উৎসবের আয়োজন করেছি। আমরা চট্টগ্রামের মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ভবিষ্যতে আরও বড় উৎসবের আয়োজন করা হবে।’
