জামদানি হিট, আজ শেষ হচ্ছে মেলা

মেলার ভেতরে ঢুকতেই রং-বেরঙের জামদানি শাড়িগুলো হাতছানি দিয়ে ডাকল। এখানে-সেখানে রাখা আছে তাঁত। সেখানে ক্রেতা আর বিক্রেতাদের সামনেই তাঁত বুনছেন তাঁতি। বলছি চতুর্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যালের কথা। উৎসবের তৃতীয় দিন সন্ধ্যায় মেলায় ঢুঁ দিয়ে চোখে পড়ল এসব দৃশ্য।

সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে জামদানি শাড়ি
ছবি: প্রথম আলো

এই মেলার মূল আকর্ষণ ছিল জামদানি শাড়ি। ৫০টি দোকানের বেশ কয়েকটিই জামদানি শাড়ির। ঘিয়ে রঙের একটি শাড়ি নেড়েচেড়ে দেখছি, দোকানি বলে উঠলেন, ‘এইডা এক দাম ৮৫ হাজার টাকা। যদি বলেন ৮৪ হাজার ৯০০, পারব না।’

মেলায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে নারী উদ্যোক্তারা
ছবি: প্রথম আলো

বেশির ভাগ দোকানেই শাড়ির দাম ১৫ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখের মধ্যে। একটি দোকানে আড়াই লাখ টাকার একটি জামদানি চোখে পড়ল। এটিই উৎসবের সবচেয়ে দামি শাড়ি। ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার জামদানিগুলো বিক্রি হয়েছে বেশি।

জামদানি শাড়িই ছিল নারী ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণ
ছবি: প্রথম আলো

জামদানি ছাড়াও উৎসবে আরও ছিল লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি ও টাঙ্গাইল শাড়ি, শতরঞ্জি, পটচিত্র, রিকশাচিত্র, জুয়েলারি, টেরাকোটা, পিতল, কাঁসা, শঙ্খ, মণিপুরি কাপড়, রাঙামাটির চাকমাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর কাপড়-হস্তশিল্প পণ্য, পাট-বাঁশ-বেতজাত পণ্য আর খাবার।

খাবারের দোকানগুলোতেই ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি
ছবি: প্রথম আলো

খাবারের দোকানগুলোতেই ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে চাকমা খাবারের দোকান হেবাং থেকে নানান পদের খাবার বিক্রি হচ্ছিল দেদার। ক্রেতারা প্রচুর খাচ্ছিলেন বারবিকিউ চিকেন, মাশরুমের চপ, পোড়ানো ভুট্টা, মিষ্টি আর পিঠা। ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের সঙ্গে জটলা বেঁধে আড্ডা তো ছিলই!

খাবারের দোকানগুলোতেই ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি
ছবি: প্রথম আলো

কথা হলো নারী উদ্যোক্তা ইশরাতের সঙ্গে। তিনি নিজেই ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি করেন। তৃতীয় দিনের বিক্রি বিষয়ে বললেন, ‘আজ বিক্রি ভালো হয়েছে। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রচারণাটা কম হয়েছে। প্রথম দুই দিন তো গুলশান এলাকার লোকেরাই ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেননি যে এখানে একটা মেলা হচ্ছে। আশা করছি এই দুই দিনে পুষিয়ে নিতে পারব।’

ছিল পাপোশ আর ম্যাটও
ছবি: প্রথম আলো

জামদানি শাড়ি আর খাবারের পাশাপাশি ভালো বিক্রি হয়েছে ঘর সাজানোর সরঞ্জাম। আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই ছিল নানান অনুষ্ঠান, ফ্যাশন শো, সংগীত, সেমিনার, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ইত্যাদি। দেশীয় পণ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই এই মেলার মুখ্য উদ্দেশ্য। এ ছাড়া উদ্যোক্তাদের সঙ্গে উদ্যোক্তা, ডিজাইনার আর ক্রেতাদের যোগাযোগ ঘটিয়ে দেওয়াও এই মেলার আরেকটি লক্ষ্য। অনেকেই মেলা থেকে ভবিষ্যতে নেওয়ার জন্য পণ্য অর্ডার করেছেন।

হাতের তৈরি নানান কারুপণ্যও বিক্রি হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান শুটিং ক্লাবে উৎসবটি উদ্বোধন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। আজ রাত দশটায় শেষ হচ্ছে এই উৎসব।

আজ রাত দশটায় শেষ হচ্ছে এই মেলা
ছবি: প্রথম আলো