টেকনাফে সুপারির ফলন ভালো হলেও দাম কম

হাটবাজারে সুপারির ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ছয় হাজার সুপারি চাষি। গেল বছর ভরা মৌসুমে ভালো দাম পাওয়া গেলেও চলতি মৌসুমের শুরু থেকে স্থানীয় সুপারির বাগানমালিকেরা ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৮৭ গ্রামে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাগানের ১ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ করা হচ্ছে। গত বছর এসব বাগানে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদিত হলেও এবার ১০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বাগানমালিকদের মুখে হাসি ফুটে উঠলেও সেই হাসি মলিন হয়ে পড়েছে হাটবাজারে এসে।
সপ্তাহে প্রতি রবি ও বৃহস্পতিবার সুপারির হাট বসে। গত বৃহস্পতিবার সুপারির হাটে গিয়ে দেখা গেছে, এক পণ বড় সুপারি (৮০টি) বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ২২০ টাকায়। অথচ গত বছর এক পণ সুপারির দাম ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হওয়ায় চাষিরা লোকসানে পড়েছেন বলে জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, টেকনাফের সুপারির খ্যাতি থাকার কারণে উত্তরাঞ্চলে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এখানকার সুপারি কিনে ট্রাক বোঝাই করে দোহাজারী, পটিয়া, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এবার উত্তরাঞ্চলে ভারতের সুপারি আসায় ব্যাপারীরা টেকনাফের সুপারি কেনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ভারতের সুপারি দামে সস্তা হওয়ায় ব্যবসায়ীরা সেটাই কিনে নিচ্ছেন।
সাবরাং হাদুরছড়ার গ্রামের সুপারির বাগান মালিক নুরুল আমিন (৪২) বলেন, ‘বিক্রির জন্য দুটি জিপে করে সুপারি নিয়ে এসেছি। আমার মতো আরও প্রচুর বাগানমালিক বিভিন্ন যানবাহনে করে সুপারি নিয়ে আসছেন। গত বছরের তুলনায় ভালো ফলন হলেও চলতি দাম পাচ্ছি অনেক কম। এ কারণে লাভ তেমন থাকবে না এবার।’
টেকনাফে সুপারির ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী ও জোনাব আলী সওদাগর জানান, এখানকার সুপারির কদর বেশি থাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা সদর থেকে ব্যবসায়ীরা টেকনাফে এসে সুপারি কিনে নিয়ে যেতেন। এবার বাইরে থেকে তেমন ব্যবসায়ী না আসায় দাম অনেক কমে গেছে।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সুপারির জন্য টেকনাফ বিখ্যাত। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া বাগানমালিকদের অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হলেও স্থানীয় লোকজন ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। এ জন্য বাগানমালিকেরা ভারত থেকে সুপারি আসাকে দায়ী করছেন।