
প্রত্যেক মানুষের আগ্রহ সম্ভবত এখন সুস্থ, সুন্দরভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকাতেই। পৃথিবীতে ৭০ বছর বয়সও কিন্তু খুব বেশি নয় বেঁচে থাকার জন্য। কিন্তু সে বয়সে গিয়েও যদি আপনি বয়সের তুলনায় অনেকটা বেশি সুস্থ, সুন্দর, কর্মঠ আর লাবণ্যময়ী হন, তবে তার আনন্দ সম্ভবত দ্বিগুণ হয়ে উঠবে।
দীর্ঘদিন লাবণ্যময়ী থাকার জন্য অনেক কিছু করতে হবে বলে যাঁরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হন, তাঁদের কিন্তু আসলে দুশ্চিন্তার কারণ কিছু নেই। সুস্থ থাকার জন্য খেতে হবে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শুধু মানুষকে সুস্থ রাখে না, এটি ডিএনএ কোষকে সুরক্ষিত রাখে। এ ছাড়া ক্যানসার প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে।
মানুষের দেহে প্রতিনিয়ত রাসায়নিক বিক্রিয়া হতে থাকে। এ বিক্রিয়াতে যে মুক্ত মৌল তৈরি হয়, তা মানুষের দেহে জমা হতে থাকে। তবে কি সেটা নিয়ে ভয়ের কিছু আছে? পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার বলেন, মানুষের শরীরে প্রতিদিন যে দূষণ জমা হতে থাকে, তা থেকে কিন্তু নানা ধরনের ক্ষয় হতে থাকে। সেটা থেকে বাঁচাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট খুব ভালো কাজ করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
খেয়াল করলে দেখা যাবে, যারা নিরামিষভোজী তাদের ত্বকের সঙ্গে অনেক বেশি আমিষভোজীদের ত্বকের একটা পার্থক্য থাকে। সেটার অনেক বড় একটা কারণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। সব ধরনের তাজা ফল আর সবজিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এ ছাড়া বিটা ক্যারোটিন ‘সি’ আর ভিটামিন ‘ই’-সমৃদ্ধ খাবার অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস।
মানুষের শরীরে যেসব মুক্ত মৌল তৈরি হচ্ছে, সেগুলোর উৎপাদন বন্ধ করা যেহেতু সম্ভব নয়, তাই চিন্তা করতে হবে কীভাবে এসব মৌলের ক্ষতি কমানো যায় বা মুক্ত মৌলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা যায়। এ কাজটিই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট করছে। আলফা ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন লাইকোপিন, ক্রিপটোজ্যানথিন, ক্যানজ্যানথিন লিউটেন, বায়োফ্ল্যাভোনয়েডেস পলিফিনলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, আয়রন ইত্যাদি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
আমাদের শরীরের ভেতর যেসব সুপার অক্সাইড ডিসমিউটেজ, গ্লটাথিওন পার-অক্সাইড ইত্যাদি এনজাইম আছে, এরাও একধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। অনিয়ন্ত্রিত আর বেহিসাবি খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে রোজকার চাপ, দুশ্চিন্তা, ধূমপান ইত্যাদি শরীরের এই নিজস্ব অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ক্ষতি করে দেয়। তাই সুস্থ ও লাবণ্যময়ী থাকতে চাইলে কিন্তু নিয়মিত খেতে হবে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।