মনের বাক্স
তোমাকে ফেরাতে পারলাম না
পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে
এলোমেলো ভাবনা
জন্মের পর থেকে মানুষ যে জিনিসের জন্য অপেক্ষা করে থাকে তা হলো ‘মৃত্যু’। যে অপেক্ষা করতে করতে ভেতরের আত্মাটি মরে যায়, বেঁচে থাকে শুধু প্রাণটুকু। একে একে মরে যেতে থাকে সব আশা, ইচ্ছা, পছন্দ, ভালোবাসা। শুধু মনে হয়, এই বিষাদময় জীবনের তিক্ততা থেকে বেঁচে উঠতে পারলেই বাঁচি। আবার যদি কোনো একদিন সময়টা সুখের কেটে থাকে, তখন মনে হয় ‘আর কটা দিন যেন বাঁচি।’
কী অদ্ভুত! সুখের সময়টুকু এত ছোট। এসব ভাবতে ভাবতে মানুষ আবার সেই ‘মৃত্যুর’ অপেক্ষা করতে থাকে। মৃত্যু তো অনিবার্যই। তাই বলে কি জীবনটাকে উপভোগ না করেই কাটিয়ে দেব? না, কখনোই না। যত দিন এই প্রাণ আছে, তত দিন আনন্দে উপভোগ করতে হবে জীবন। যাতে হাসিমুখে এই বিষাদময় জীবনের দরজাটাকে বন্ধ করে দিতে পারি।
তাসনুভা হাসান, খিলগাঁও গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
তোমাকে ফেরাতে পারলাম না
তিন মাস পূর্ণ হলো, সম্পর্ক শেষ হওয়ার। আমি হাজারবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও পারিনি। তবে তোমার সুখের জন্য হয়তো ভুলে থাকার অভিনয় করছি। জানো, আমি ভুলে যাব কবে? যেদিন আমার দেহের শেষ নিশ্বাসটুকু বেরিয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস, তুমি আমায় কখনো ভুলে যেতে পারবে না। তুমি এখনো আমায় অনেক ভালোবাসো। অনেক দিন আগে থেকে দুজন দুজনকে পছন্দ করি। দুই বছরের সম্পর্কে কত হাজারবার ব্রেকআপ হয়েছিল আমাদের। তবে সর্বোচ্চ একদিন টিকত সেসব। কিন্তু এবার অনেক দিন হয়ে গেল। মনে আছে, তুমি কথা দিয়েছিলে আমাকে ছাড়া কাউকে মানিয়ে নিতে পারবে না। পৃথিবীর সবাই একপাশে গেলেও, তুমি আমার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে। কিন্তু কী হলো, হঠাৎ এভাবে বদলে গেলে! আমি জানি না, তুমি কি আমার মতো না ঘুমিয়ে রাত পার করে দাও? কেঁদে বালিশ ভেজাও। যখনই তোমার বান্ধবী কিংবা পরিবারের কাউকে দেখি তখনই বুকটা ধড়ফড় করে ওঠে। আমার হৃদয় থেকে তোমার নামটা মুছে ফেলতে পারছি না। তোমায় বড্ড মিস করি। ফিরে আসো প্লিজ, তোমাকে ছাড়া আমি বড় একা।
তৈয়ব আলী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
ছেলেবেলার পকেট খরচ
আমরা দুই ভাইবোন। স্কুল বাসার পাশেই হওয়ার কারণে হেঁটেই যেতাম ভাইয়ার সঙ্গে। বাসা থেকে আম্মু টিফিন বানিয়ে দিত। আর আব্বু ভাইয়াকে টাকা দিয়ে দিত। টিফিন পিরিয়ডে আমার যা খেতে ইচ্ছা করত, ভাইয়াকে বললে কিনে দিত। আমাদের স্কুলে ঝালমুড়ি নিয়ে আসত আনারুল কাকু। ওই ঝালমুড়ি না খেলে আমার পেটই ভরত না। এখনো ওনার হাতের ঝালমুড়ির স্বাদ আমার মুখে লেগে আছে।
ভাইয়া স্কুল পরিবর্তন করার পর আমাকে টিফিনের পাশাপাশি দুই থেকে পাঁচ টাকা দেওয়া হতো। কখনো সব টাকা খরচ করে ফেলতাম, আবার কখনো জমিয়ে রাখতাম। জমানো টাকা দিয়ে বন্ধুদের জন্মদিনে উপহার দিতাম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমারও স্কুল বদল হলো। আর দ্রুত বেড়ে গেল টিফিনের টাকাও। ছেলেবেলার ওই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে।
সুমাইয়া সুলতানা, রংপুর
আবার ফিরে পাওয়া
প্রথম পরিচয় আট বছর আগে। প্রথম দেখাতেই আর চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। ভেতরে কেমন যেন একটা অনুভূতি হলো, আমি নিজেই বুঝতে পারলাম না। কিছুদিনের মধ্যে চেনা–জানাও হয়ে গেল। কিন্তু কথা হতো খুবই কম। তারপরও সব চলত যেন ইশারায়। দুই বছর পরে আলাদা হয়ে যাওয়ার পরও আমার আকর্ষণে ঘাটতি পড়েনি। না ছিল কোনো যোগাযোগ, না ছিল কথাবার্তা। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগেও যেন মনে হচ্ছিল আমি অন্য যুগের বাসিন্দা। মুঠোফোন নম্বর, ফেসবুক, টুইটার আইডির কোনোটিই আমার জানা ছিল না। কিন্তু দুই মাস আগে ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ ফেসবুকে নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে একটা আইডি নজরে আসে। নামটা খুবই পরিচিত। যদিও প্রোফাইল পিকচার একটা কার্টুনের। আত্মবিশ্বাস নিয়ে পাঠালাম রিকোয়েস্ট, এক্সেপ্ট হলো দুই ঘণ্টা পর। আট বছর আগের অনুভূতিটা যেন নাড়া দিল নতুন করে। শুধু তা–ই নয়, কিছুক্ষণ পর এল একটা মেসেজও। আমি রীতিমতো অবাক হয়েছিলাম। এরপর থেকে চলছে...। মাস্টারের বেটি, ভালোবাসা সব সময়ের জন্য।
মো. ফাহাদ আল ফয়সাল, গাইবান্ধা
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’