দেয়ালে আঁকা মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা

দেয়ালে শিল্পীর রং তুলির আঁচড়। ছবি: ছুটির দিনে
দেয়ালে শিল্পীর রং তুলির আঁচড়। ছবি: ছুটির দিনে

দেয়ালই হয়ে উঠেছিল ক্যানভাস। তাতেই রংতুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা। ইতিহাসের যে পরিক্রমায় এসেছিল মুক্তিযুদ্ধ, সেই প্রেক্ষাপট উঠে এসেছিল সেসব ছবিতে। এর মধ্যে ছিল বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অমোঘ বাণী—রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, শহীদের রক্তচিহ্ন, ছিল শহীদ মিনার। আঁকা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, ২৫ মার্চের গণহত্যা, প্রতিবাদী বাঙালির আন্দোলন, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ, বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধাদের উল্লাস আর লাল-সবুজের পতাকা। এক লহমায় যেন পড়ে ফেলা যায় বাংলাদেশের জন্মের গল্প।

যে সত্য গল্প ছুঁয়ে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, রিকশা ও ইজিবাইকের চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। অনেকে ক্ষণিক দাঁড়িয়ে দেয়ালে আঁকা মুক্তিযুদ্ধের ছবিগুলোতে বুঁদ হয়েছেন। হেঁটেছেন ইতিহাসের পথে। 

৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবসে দেয়াল রাঙানোর কাজটি করছিল ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ নামের ফেসবুকভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের গল্পে দেয়াল রাঙায় তারা। এবারই প্রথম নয়, ২০১৫ সাল থেকে সংগঠনটি ‘রঙিন হবে আমাদের স্কুল’ স্লোগানে এই কর্মসূচি পালন করছে। সংগঠনের অন্যতম সদস্য কাজল সাহা বলছিলেন, ‘ব্যতিক্রম কিছু করার চিন্তা থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা সব শ্রেণি-পেশার মানুষসহ তরুণেরা উদ্বুদ্ধ করবেন।’ তাঁর কথায় ফুটে উঠল অভিনব এই উদ্যোগের অন্তরালের আরও কথা। তিনি জানালেন, নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। বইয়ের পাতায় কিংবা সিনেমায় দেখেছে। আমরা তরুণ প্রজন্মসহ সবার কাছে মুক্তিযুদ্ধকে উপস্থাপন করতে চেয়েছি। এ জন্য সংগঠনের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত প্রায় ১০০ ছবি বাছাই করে। সেখান থেকে আঁকার ছবি চূড়ান্ত করা হয়। তারপর শিল্পীদের ছবি ও পেনসিল দেওয়া হয়। সেসব কাজ করেছেন সংগঠনের তরুণ সদস্যরাই।