দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন আশা–আলো
একসঙ্গে জন্ম, দেখতে একই রকম, আবার পড়ছেনও একই বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিজ্ঞতাটা কেমন?
কে বড় আর কে ছোট, দীর্ঘ দিন সে কথা জানতেন না আশা আর আলো। বড়-ছোট নিয়ে তাঁদের মধ্যে যেন ঝগড়া না হয়, সে জন্যই তথ্যটি দুজনকে জানানো হয়নি। এ কারণেই কি না কে জানে, দুই বোনের ঝগড়া হয়নি কখনোই।
আফসানা বিনতে আহাদের ডাকনাম আশা, আর আফরোজা বিনতে আহাদকে সবাই ডাকে আলো। দুজনই পড়ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। জন্মটা যেমন একসঙ্গে, দুজনের একাডেমিক জীবনটাও সমান্তরাল। দেখা গেছে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে একজনের অবস্থান দ্বিতীয় তো আরেকজন তৃতীয়। মাধ্যমিক পরীক্ষায় দুজনই পান জিপিএ ৫। কিন্তু ধাক্কাটা আসে এরপর। উচ্চমাধ্যমিকের ফল আশানুরূপ হলো না। তারপর দুজনের কেউই যখন পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন না, একরকম ভেঙেই পড়েছিলেন।
তবে আশার আলো নেভেনি। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে দুজনেই সুযোগ পেয়ে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়েও কেমন করে দুজনের ঠিকানা মিলে গেল? আশা বলেন, ‘আমরা দুজন একই টেবিলে পড়াশোনা করি। ছোটবেলা থেকেই এটা আমাদের অভ্যাস। একাডেমিক জীবনের সফলতা-ব্যর্থতা তাই আমরা দুজন ভাগ করে নিতে পারতাম। কিন্তু প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষায় যখন কোথাও সুযোগ পেলাম না, ওই সময়টা আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল। নিজেদের পরিশ্রমের ফলে অবশেষে একই বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি।’ আলো যোগ করলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় আমার নাম অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিল। আর আশা আপু ছিল মেধাতালিকায়। সে জন্যই আমরা বিষয় নির্বাচন এমনভাবে করেছি, ভর্তি হলে যেন দুজন একই বিভাগে থাকতে পারি।’
মা নাচের শিক্ষক বলেই হয়তো দুই বোনের নাচের প্রতি আগ্রহ ভীষণ। বিভাগের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে নানা মঞ্চে দেখা যায় তাঁদের পরিবেশনা। পড়াশোনা শেষ করে সরকারি কর্মকর্তা হতে চান দুজনই।