আঙুলের বিশ্রাম নেই। ঘরে বা বাইরে আঙুল দিয়ে যে কাজই করুন, কিছুটা প্রভাব নখের ওপরও পড়ে। হাতের ত্বকের মতো নখেরও যত্ন প্রয়োজন। নখ ভেঙে যাওয়া বা বড় করতে না পারা অনেকের কাছেই বিড়ম্বনার মতো। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ যত্নের মাধ্যমে নখের সুস্থতা ও সৌন্দর্য—দুটোই নিশ্চিত করা যাবে।
ভেতর থেকে নখের যত্ন
আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা বলেন, নখের বিন্যাস ও বৃদ্ধিতে আমিষের ভূমিকা থাকে। যাকে বলে কেরাটিন। শরীরে আমিষের অভাব হলে নখ ও চুলে তার প্রভাব পড়ে। আমিষসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। আমিষের সঙ্গে অবশ্যই পরিমিত পানি পান করতে হবে। কিছু খাবার আছে, যেগুলো ভেতর থেকে নখ মজবুত করতে সহায়তা করবে।
মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ মাছ আমিষ ও সালফারের উৎকৃষ্ট উৎস। মাছ নখ মজবুত ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
ডিম: আমিষ ছাড়াও ডিমে ভিটামিন বি১২, বায়োটিন ও আয়রন থাকে, যা নখ পুরু করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম যোগ করুন আর ফলাফল দেখুন।
ওটস: ওটসে কপার, জিংক, ম্যাংগানিজ, ভিটামিন বি থাকে, যা নখ ও শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সবুজ শাকসবজি: ক্যালসিয়াম, আয়রন, অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ পালংশাক, ব্রকলি ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় যুক্ত করলে আপনার নখ সুন্দর ও মজবুত হবে।
ভিটামিন ই: নখ শক্ত আর মজবুত করতে ব্যবহার করতে পারেন ভিটামিন ই তেল। একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে ভেতরের জেল বের করে নখে মাখুন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেতেও পারেন।
বাইরে থেকে নখের যত্ন
রাহিমা সুলতানা আরও বলেন, নখের সুস্থতার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মূল শর্ত। প্রতিদিন বাসন মাজা বা কাপড় কাচার কাজ শেষ হলে হাত ধুয়েমুছে খুব ভালো করে ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। তাতে হাত আর নখ—দুটোই ভালো থাকবে। ভ্যাসলিন নখের জন্য খুব উপকারী। রাতে ঘুমানোর আগে নখে ভ্যাসলিন মেখে নিন।
নখ সুরক্ষিত রাখতে ঘরের কাজ করার সময় গ্লাভস পরে নিতে পারেন। নখ যেন কখনোই কড়া সাবান বা গরম জলের সংস্পর্শে না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
বেশি চাঁছার কারণে নখ পাতলা হয়ে ভেঙে যায়। তাই নখ চাঁছা থেকে বিরত থাকতে হবে।
যতটা সম্ভব নেইলপলিশের ব্যবহার কম করুন।
পরিমাণমতো জলপাই তেলে কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস মেশান। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১০ আঙুলের নখেই ভালো করে এ মিশ্রণটি মালিশ করুন। সারা রাত মিশ্রণটি নখে লাগানো থাকবে। কিছুদিন লাগালে উপকার পাবেন।
তেল, হলুদ ও রান্নার মসলা থেকে রক্ষা পেতে চামচ দিয়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
দাগ, অতিরিক্ত হলুদ ভাব, খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যাওয়া, ঘা বা পচে যাওয়াসহ নখের যেকোনো সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।