নতুনদের নিয়োগে অভিজ্ঞতা প্রাধান্য দেয় না এসিআই

এসিআইতে িবভিন্ন ইউনিটে কাজ করছেন ১২ হাজারের অধিক কর্মী। আপনারও গন্তব্য হতে পারে এই প্রতিষ্ঠান। এসিআই প্রধান কার্যালয় থেকে ছবিটি তুলেছেন জাহিদুল করিম
এসিআইতে িবভিন্ন ইউনিটে কাজ করছেন ১২ হাজারের অধিক কর্মী। আপনারও গন্তব্য হতে পারে এই প্রতিষ্ঠান। এসিআই প্রধান কার্যালয় থেকে ছবিটি তুলেছেন জাহিদুল করিম

দেশের প্রথম সারির বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হচ্ছে এসিআই লিমিটেড। এই কোম্পানি চারটি টেজিক বিজনেস ইউনিটের সমন্বয়ে ২৫টির অধিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ইউনিটে কাজ করছেন ১২ হাজারের অধিক কর্মী। একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেক তরুণ এসিআই লিমিটেডে চাকরি করার স্বপ্ন দেখেন। প্রতিবছরই বিভিন্ন সেক্টরে কয়েক হাজার লোক নিয়োগ করে এসিআই।
এসিআই লিমিটেডে মানবসম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মঈনুল ইসলাম জানালেন, গত বছরে বিভিন্ন ইউনিটে ২ হাজার ৮০০-এর বেশি লোক নিয়োগ করা হয়েছে এসিআইয়ে। এখানে সারা বছরই লোক নিয়োগ করা হয়। আর ফ্রেশার বা নতুনদের নেওয়ার ক্ষেত্রে এখানে অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না।
মঈনুল ইসলাম বলেন, এসিআই এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন খাবার, কৃষিপণ্য, মোবাইল সেট, ইলেকট্রনিকস পণ্য, সুপারশপসহ নানা ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। রাজধানীসহ সারা দেশে এসিআইয়ের সুপারশপ স্বপ্নর শাখা আছে ৪৭টি। এতে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরিরও সুযোগ আছে। এসিআইয়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর কারখানায় যেমন কারিগরি ক্ষেত্রে বড় ধরনের লোক নিয়োগ করা হয়, তেমনি করপোরেট অফিসেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে লোক নিয়োগ হয়। এ ছাড়া মার্কেটিং বা সেলসেও লোক নিয়োগ করা হয়। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা কাস্টমার কেয়ার আছে। বিপুল পরিমাণ ভোক্তাদের সেবা আরও সুনিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে কলসেন্টার খোলার পরিকল্পনাও আছে বলে জানালেন তিনি।
এসিআইয়ের কারখানায় প্রকৌশলীদের কাজের ভালো চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি কৃষি সেক্টরে বেশ বিস্তৃত, তাই কৃষি বিষয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন, এমন তরুণদেরও কাজের সুযোগ আছে। এর বাইরে মানবসম্পদ, ফাইন্যান্স, কমার্শিয়াল, আইটি ইত্যাদি বিভাগে সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে পাস করা তরুণদের নেওয়া হয়।

.
.

বিভিন্ন বিভাগে চাকরির সময় যেসব সিভি জমা পড়ে, সেখানে কোন কোন বিষয় লক্ষ রাখেন—এমন প্রশ্নে মঈনুল ইসলাম বলেন, সিভিতে একাডেমিক ফলাফল, জ্ঞান, প্রেজেন্টেশন স্কিল ও তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান কেমন আছে তা দেখা হয়। এরপর সেখান থেকে সিভি বাছাই করে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা ভালো করেন, তাঁদের থেকে বাছাই করে ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতা কেমন, তা সামনাসামনি যাচাই করার জন্য ডাকা হয়। সেখানে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা, দলগত দক্ষতা, নেতৃত্ব দক্ষতা কেমন, তা দেখা হয়। সেখানে বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়। এগুলোর মাধ্যমে দেখা হয় কার চিন্তার গভীরতা কেমন। যাঁরা তাঁদের কাজের মাধ্যমে চিন্তার গভীরতার প্রকাশ ও ভালো ভালো আইডিয়া দিতে পারেন, তাঁদের চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। সেখানে নিয়োগ বোর্ডের প্যানেলের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর ছয় মাসের মধ্যেই সফট স্কিল, সময় ব্যবস্থাপনা, মূল্যবোধ, আত্ম-উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিনি জানান, প্রতিবছর এখানে কর্মীদের কাজের মূল্যায়ন অনুসারে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। আর সার্বিক সুবিধা বেশি থাকার কারণে এখানে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার হারও অনেক কম।
নতুন চাকরিপ্রার্থীর সিভিতে কী চান—মঈনুল ইসলাম বলেন, নতুন চাকরিপ্রার্থীরা তাঁদের প্রাথমিক তথ্যগুলো সিভিতে দেবেন। যে পদের আবেদন করছেন, তার সঙ্গে মিলিয়ে কোনো কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তা উল্লেখ করবেন। যাঁর সিভি যত ভালো হবে, চাকরির বাজারের প্রতিযোগিতায় তিনি তত এগিয়ে থাকবেন।
স্থায়ী কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি এসিআই তাদের প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নেরও সুযোগ দেয় ফ্রেশারদের। এ ক্ষেত্রেও কর্মী নিয়োগের মতোই সিভি বাছাই করা হয় গুরুত্ব দিয়ে। যেসব ইন্টার্ন কাজে ভালো করেন, তাঁদের স্থায়ীভাবে এখানে নিয়োগের সুযোগ আছে। এসিআই ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে নতুন চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ দেয়। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এসিআইয়ের নিজস্ব ওয়েব পোর্টালে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া দৈনিক খবরের কাগজ ও চাকরির ওয়েব পোর্টালেও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।