নতুন বছরে কী করবেন

নতুন বছর সামনে রেখে আমাদের কত যে পরিকল্পনা আর সিদ্ধান্ত। আত্মোন্নয়ন, ঋণ পরিশোধ ও সঞ্চয় করা, অন্যদের সাহায্য করা, পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়া, বাড়তি ওজন কমিয়ে শরীরটাকে ঠিক রাখা ইত্যাদি। তবে নতুন একটা চাকরি পাওয়ার ইচ্ছেটাই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি হয়। আর সেটা অবশ্যই হবে এখনকার চাকরিটার চেয়ে ভালো, বেতন হবে বেশি এবং কর্মপরিবেশটাও হবে সুন্দর।
আরও আত্মবিশ্বাসী হোন
শুধু সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নিয়ে বসে থাকলেই হবে না। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। নইলে বছর শেষে দেখবেন, সাধের পরিকল্পনাগুলোর সব কটি মুখ থুবড়ে পড়ছে। সাফল্যের জন্য আপনাকে বরাবরের মতোই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও নতুন চাকরি না পেলে সাধারণত আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। আগে ধারণা করা হতো, আত্মবিশ্বাস ব্যাপারটা জন্মগত এবং কেউ কেউ এটা ছাড়াই পৃথিবীতে চলে আসে। কিন্তু ধারণাটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং বিভিন্ন চেষ্টার মধ্য দিয়ে মানুষ অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে। আর সে জন্য আপনাকে নতুন নতুন অনেক কিছু জানতে হবে, শিখতে হবে। আচরণ, দক্ষতা ও অভ্যাসে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। তা হলেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
আজীবনের ছাত্র হোন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব সনদ জোগাড় হয়ে গেছে বলেই পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। সবকিছু দ্রুত পাল্টাচ্ছে, জ্ঞানের জগৎটাও। তাই যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে আপনার পুরোনো শিক্ষা বা ধ্যানধারণাগুলো সব সময় সহায়ক না-ও হতে পারে। তাই জেনে নিতে হবে হালনাগাদ সব তথ্য। এ জন্য আপনার গাদা গাদা বই নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজন নেই। ইন্টারনেটের এই যুগে নিয়মিত নজর রাখুন প্রয়োজনীয় বিষয়ের ওয়েবসাইটগুলোয়। পেশা বা চাকরির সঙ্গে যুক্ত কোনো বিষয়ে সর্বশেষ তথ্যগুলো জেনে নিন। শেখার কোনো বয়স নেই। আজীবনই আমাদের শিখতে হয়। চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা ক্রমে বাড়ছে। নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ চায়, দক্ষ কর্মীরা প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েই কাজে লেগে পড়বে। তাই আগে থেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখা ভালো। চাকরির বাজারে আপনার চাহিদা বাড়বে।
আচরণে পরিবর্তন আনুন
নেতিবাচক চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে ইতিবাচক ভাবনার প্রতি গুরুত্ব দিন। আশাবাদী মানুষেরা সেটাই করেন। আর তাতে সাফল্য এসে ধরা দেয়। যখন ভালো একটা চাকরি খুঁজতে খুঁজতে আপনি হতাশায় নিমজ্জিত, তখন আচমকা ইতিবাচক ভাবনার অভ্যাস করাটা কঠিন মনে হতে পারে। তাই সুন্দর ভাবনার ব্যাপারটাকে অভ্যাসের পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
অন্যকে সাহায্য করুন
অন্যের প্রয়োজনে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না, নির্দ্বিধায় সাহায্য করুন। এ ধরনের ইতিবাচক আচরণের সুফল আপনি অবশ্যই পাবেন। সফল হওয়ার জন্য উদারতা একটি প্রয়োজনীয় গুণ। যোগ্যতা অনুযায়ী অন্যকে সুযোগ করে দেওয়া এবং নিজে পাওয়ার মধ্যে একধরনের ভারসাম্য থাকা চাই। উদার হয়ে দেখুন, মানসিকতাও ইতিবাচক হবে। কেউ উপকার পেয়ে যদি আপনাকে ধন্যবাদ জানান, সেটাই আপনার বড় প্রাপ্তি।
নতুন দক্ষতা অর্জন করুন
বারবার চর্চার ফলে কোনো কাজ নিখুঁত হয়। সময়-সুযোগ করে স্বেচ্ছাসেবামূলক কোনো কাজে যুক্ত হোন। এতে আপনার দক্ষতার ভান্ডারে নতুন কিছু যোগ হবে। ব্যাপারটা আপনার জীবনে কোনো না কোনোভাবে কাজে লাগবেই। হয়তো পেশাগত জীবনেই বৈচিত্র্য এনে দেবে। ভুলে যাবেন না, কোনো স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ঠিকমতো সম্পন্ন করতে পারলে আপনি নিজের অজান্তেই অন্যদের চেয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন। এ অভিজ্ঞতা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের চেয়েও অনেক সময় বেশি মূল্যবান অর্জন হিসেবে কাজে লাগে।
সূত্র: লিংকডইন