নাক-কান ফোটাতে পরিচ্ছন্নতা জরুরি

.
.

কান-নাক ফোটানো বা ছিদ্র করেন না, এমন বাঙালি নারী খুব কমই আছেন। কখনো কখনো তা পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতায়ও রূপ নেয়। যুক্ত হয় আনন্দ-উৎসব। সাধারণত নাক-কান ফোটানোর রেওয়াজটা শিশু বয়সেই দেখা যায়, তবে বেশি বয়সেও অনেকে তা করে থাকেন। আবার অনেকে নাক ও কানে একাধিক ছিদ্রও করেন। এসব ইদানীং ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠছে। সৌন্দর্যের প্রকাশ হিসেবেও দেখেন অনেকে, পরেন নানা গয়না। তবে তা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
আমাদের দেশে সাধারণত বাড়িতে দাদি বা নানির হাতে নাক ও কান ফোটানোর ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। এ ক্ষেত্রে সুই ও সাদা সুতা ব্যবহার করা হয়। সাদা সুতার বিশেষত্ব হচ্ছে, রক্ত বের হলে যাতে সহজে বোঝা যায়। সাধারণত আট থেকে ১০ বছর বয়সের মধ্যেই মেয়েদের নাক-কান ফোটানো হয়। তবে শহুরে কর্মব্যস্ততা আর একক পরিবারে অনেক সময় দাদি-নানির কাছে তা আর সম্ভব হয় না। মা-বাবা দ্বারস্থ হন হাসপাতাল কিংবা বিউটি পার্লারের।
এ বিষয়ে রূপবিশেষজ্ঞ তানজিনা শারমিন বলেন, বাড়িতে আর পার্লারে যেখানেই বাচ্চাকে নিয়ে যান, অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি। নারীর সৌন্দর্যের দিকটা নাক ও কানের গয়নার ওপর অনেক খানিই নির্ভর করে। বেশির ভাগ নারীর কান ও নাকের ছিদ্র সঠিক স্থানে করে না। এতে করে কানের দুল ও নাকের ফুল যখন পরে, তা বঁকা হয়ে থাকে, যা দেখতে খুব খারাপ লাগে। এ ছাড়াও আছে ত্বকে নানা ধরনের সংক্রমণের ভয়।
পরিচ্ছন্নতা জরুরি
বাড়িতে না ছিদ্র করে ভালো পার্লারে বা হাসপাতালে করা উচিত৷ বেশি বয়স হলে আসলে কানের ছিদ্র করতে অসুবিধা হয়। এ ছাড়া অনেকে কানের উপরি অংশে দুই-তিনটা ছিদ্র করে থাকে, এতেও ক্ষতি হয়। অনেক সময় হাড়ে লেগে যেতে পারে, তাই সাবধানতার সঙ্গে করা উচিত। আর যেকোনো পার্লারে করলেও সাবধান থাকতে হবে একই মেশিনে যাতে না করা হয়। এ ছাড়া হাতে গ্লাভস পরে নিয়ে পরিষ্কার যন্ত্রাংশ ব্যবহার করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাত থেকে ১৪ দিন কোনোভাবেই নখ বা অন্য কিছু দিয়ে আক্রান্ত স্থানে হাত দেওয়া যাবে না। এতে করে জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। অবশ্যই বিশেষজ্ঞ লোকের কাছে ছিদ্র করাতে হবে। জীবাণুমুক্ত পরিষ্কার উপকরণ থাকতে হবে।
যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি
গরম ভাঁপ: একটি বোতলে কিংবা হট ব্যাগে গরম পানি নিয়ে অথবা একটি সুতি পাতলা কাপড় গরম পানিতে ভিজিয়ে কানের কাছে চেপে ধরুন। গরম ভাঁপ কানের ভেতরে গেলে কানের ভেতরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এতে করে কানের ব্যথা উপশম হবে।
রসুন ও তিলের তেল: রসুনের অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান কানের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে সৃষ্ট ব্যথা উপশমে কাজ করে। দুই টেবিল চামচ তিলের তেলে এক চা-চামচ থেঁতো করা রসুন ফুটিয়ে নিন দুই-তিন মিনিট। রসুন ছেঁকে নিয়ে এই তেল ঠান্ডা হতে দিন। তেল ঠান্ডা হলে এক-দুই ফোঁটা তেল নাক-কানের ছিদ্রে লাগান। ব্যথা কমে যাবে।
হাসপাতাল ও বিউটি পার্লারেও নাক ও কান ফুটো করা হয়ে থাকে। খুব কম সময়ে হালকা ব্যথানাশক স্প্রের মাধ্যমে কানের ছোট্ট রিংসহ ছিদ্র করা হয়। তিন দিন পরে সোনার হালকা রিং পরিয়ে দিলে ব্যথা উপশম হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেও নাক-কান ফোটানো হয়।