হিমু, রুপা ও শুভ্র হাজির
নিজের মধ্যে রুপাকে খুঁজে পাই
১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের নবম প্রয়াণ দিবস। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় এই লেখকের সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হিমু, রুপা ও শুভ্র। অনেক তরুণ বইয়ের চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেকে খুঁজে ফেরেন। কিন্তু বাস্তবেই যাদের নাম হিমু, রুপা কিংবা শুভ্র, তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন? এখানে পড়ুন জাকিয়া রুপার অভিজ্ঞতা।
হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক শুধু নন, একজন প্রিয় মানুষও। অনেকের মতো আমিও তাঁর অনেক বই পড়েছি। সবচেয়ে ভালো লাগে এই ভেবে যে তাঁর সৃষ্ট চরিত্রের সঙ্গে আমার নামের মিল। আমিও রুপা। আর রুপা নামের সঙ্গে জড়িয়ে যায় হিমু। তবে শুধু রুপাকে নিয়েও তিনি উপন্যাস লিখেছেন।
আমি যখন হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ি, তখন অনেক জায়গাতেই নিজেকে খুঁজে পাই। রুপার মতো আমিও কলাবাগান এলাকায় থেকেছি। আমার বাবাও অনেক সহজ-সরল একজন মানুষ। হুটহাট এখানে-সেখানে চলে যান।
একবার আমার বন্ধু এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে, সেটা ২০১৬ সালে। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের রুপার মতো আমার সঙ্গে তার দেখা হয়নি। তবে সে আমার জন্য এসেছিল, আমাকে চমক দিতে। সে একটু স্পর্শকাতর মানুষ। অভিমান করে সে আমার সঙ্গে দেখা না করে চলে যায় সেই দূর দেশে।
আমিও নীল শাড়ি পরে অপেক্ষা করেছি পান্থপথে। আমার কাছ থেকেও ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ, পরিবার থেকে তাকে পছন্দ করত না। আমার আবার পাঞ্জাবি বানিয়ে দেওয়ারও অভ্যাস আছে। একজন কথা দিয়েছে সে আমার সঙ্গে হলুদ পাঞ্জাবি পরে রিকশায় ঘুরবে। সে হিমু আর আমি রুপা হয়ে ঠিক হুমায়ূন আহমেদের প্রতিটা চরিত্রে মিশতে চাই। মাঝরাতে সোডিয়াম বাতির নিচে হাঁটব, বৃষ্টিতে ভিজব দুজন।
ময়ূরাক্ষীর রুপার মতো আমি রূপবতী কি না, জানি না। তবে বই পড়ার সময় আমি নিজেকে সেখানে আবিষ্কার করেছি অনেকবার। এভাবেই বেশ কয়েকবার আমি নিজেকে হারিয়েছি হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ে। নিজের নাম রুপা হওয়ায় বেশ ভালো লাগে। আনন্দ পাই এটা ভেবে যে আমার প্রিয় লেখকের একটি বই আছে আমার নামে!
কষ্ট পাই, প্রিয় লেখক আর নেই আমাদের মাঝে। নতুন কোনো লেখা আর পাই না তাঁর। তবু সংগ্রহের বইগুলো বারবার পড়ি আর স্মরণ করি হুমায়ূন আহমেদ আছেন, তিনি বেঁচে আছেন আমার মতো পাঠকের হৃদয়জুড়ে।