>রেকর্ড গড়া ট্রান্সফারে বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে গিয়েছেন নেইমার। এটাই ছিল চলতি ফুটবল মৌসুমের সবচেয়ে বড় খবর। কয়েক মাস যেতে না যেতেই গণমাধ্যমে খবর আসতে শুরু করেছে, নেইমার সেখানে সুখে নেই! সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে, নেইমার নাকি আবার বার্সায় ফিরতে চান। আবার রিয়াল মাদ্রিদও বস্তাভর্তি ইউরো নিয়ে ওত পেতে আছে। এসব বিষয়ে মেসির সঙ্গে নেইমারের একটি দীর্ঘ কথোপকথন ফাঁস করল রস+আলো। কথোপকথনের চুম্বকাংশ প্রকাশ করলেন মাসউদ ফোরকান
নেইমার: হ্যালো...ভাই, কেমন আছেন?
মেসি: কে? কণ্ঠ চেনা চেনা লাগতেছে।
নেইমার: ভাই, আমি নেইমার। এত দিন একসঙ্গে ফুটবল খেললাম, কুতিনহোরে দলে পাইয়া এত তাড়াতাড়ি ভুইলা গেলেন!
মেসি: ভুলুম ক্যান? ঠ্যাংভাঙা নেইমার না তুই?
নেইমার: ভাই, অ্যামনে মজা নিলেন? কী নিষ্ঠুর রসিকতা! যা-ই হোক, কী করতেছিলেন?
মেসি: বই পড়ি। এবারের বইমেলার বেস্টসেলার। ‘চ্যাম্পিয়নস লিগে আমি যেভাবে ভালো খেলি’, লেখক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
নেইমার: ভাই, আপনি রোনালদোর বই পড়তেছেন! হইতেই পারে ওর বই বেস্টসেলার, আর আপনি চ্যাম্পিয়নস লিগে তার সঙ্গে গোলে পাইরা উঠতেছেন না, তাই বইলা...!
মেসি: ওর বই আমি কিনে পড়তেছি নাকি? সৌজন্য কপি পাইছিলাম। ওর শয়তানি দেখলে গা জ্বলে। বইয়ে অটোগ্রাফ দিয়া আমার বউরে লিখছে, ‘প্রিয় ভাবিকে’। পরের এল ক্লাসিকো আসুক না, দেখামু মজা।
নেইমার: ঠিক কইছেন ভাই! ওর তো চোখ খারাপ।
মেসি: থাক, তুই আর ওরে নিয়া কিছু বলিস না। শুনলাম, তুই নাকি রিয়ালে যাইতাছস? এই ছিল তোর মনে? রিয়ালেই যদি যাবি, তখন পিএসজি-নাটক করার কী দরকার? নাকি সরাসরি বার্সা ছাইড়া রিয়ালে গেলে লোকে কী বলে ভাইবা পিএসজিতে গেলি?
নেইমার: আমি রিয়ালে? আপনি এ কথাটা কইতে পারলেন ভাই!
মেসি: দল ছাইড়া প্রথমে গেল দানি। তুইও গেলি ওর পেছনে। এ কারণে আপন মানুষদের বিশ্বাস করতে নাই।
নেইমার: ভাই, আমার দোষ নাই। ওরা আমারে লোভ দেখাইছে! জায়গা-জমি, নতুন গাড়ি, ১৫ কাঠার ওপর একটা নিজস্ব ফ্ল্যাট। কী করুম, কন?
মেসি: হ, এগুলা তো বুঝি। তোর বয়স কম, এক জায়গায় পইড়া থাকলে হইব! তো ফরাসি দেশ কেমন রে? সুযোগ-সুবিধা কেমন?
নেইমার: সবই ভালো, শুধু এই ক্লাবের পোলাপাইনগুলার মধ্যে ম্যাচুরিটি বলতে কিছু নাই। নিজে নিজে গোল করতে চায়। ফ্রিকিক-পেনাল্টি নিয়া আমরা কী করি, তা তো দেখছেনই।
মেসি: হে হে হে। পুরাই বিনোদন। তোরা নাকি এইবার চ্যাম্পিয়নস লিগে কি-না-কি কইরা ফালাইবি! বাদ পড়লি তো ওই রিয়ালের লগে খেইলাই! হে হে হে।
নেইমার: বলা নাই, কওয়া নাই, পা-টা গেল ভাইঙা। ডাক্তারে বইলা দিছে, এই মৌসুমটা আর খেলতেই পারুম না। সারা দিন শুইয়া-বইসা থাকতে ভালো লাগে না! এই ক্লাবে আর ভাল্লাগতাছে না ভাই, আপনি যদি কন চইলা আসুম। খালি একটা আওয়াজ দেন।
মেসি: যাওয়ার সময় মনে আছিল না? এখন ঠ্যালা সামলা। আর বইসা না থাইকা বিসিএসের প্রিপারেশন নে। তোর বয়স কম। এখনো সুযোগ আছে।
নেইমার: ভাই, সামনে বিশ্বকাপ। বিসিএসের প্রিপারেশন নিমু মানে?
মেসি: ঠ্যাংঠুং কবে ঠিক হয় কে জানে! খেলাধুলা আর কত? একবার বিসিএসের ক্যাডার হইলে মাঠের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত দৌড়াদৌড়ি করা লাগব না। তখন তোর কথাতেই সবাই...
নেইমার: ভাই, বাদ দেন তো বিসিএসের কথা, কোটা থাকলে কথা আছিল। এইবারের বিশ্বকাপ কিন্তু আপনার শেষ সুযোগ। আমরা এইবার ফর্মে আছি। ডরাইতাছেন নাকি? আপনি মনে হয় চাইতাছেন না আমি খেলি।
মেসি: তোগোরে ডরাইতাছি না। ডরাইতাছি হিগুয়েনরে নিয়া। প্রতিবার ক্লাবে ফাটায়া দেয় আর আমগো কোচ ভাইবা বইসা থাকে ও জাতীয় দলেও কি-না-কি করব! শেষ পর্যন্ত করে কী? ফাঁকা মাঠেও গোল দিতে পারে না।
নেইমার: হে হে হে। গতবার বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা ভুলতেই পারতাছি না। হে হে হে। হিগুয়েন একটা বিনোদন।
মেসি: নেইমার, তোর ভাবি ডাকতাছে। ফোন রাখলাম।
নেইমার: হ্যালো ভাই...হ্যালো...