পঞ্চকবির বর্ষার গান

পঞ্চকবির বর্ষার গানের অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশন করেন প্রমা অবন্তি ও তঁার দল l প্রথম আলো
পঞ্চকবির বর্ষার গানের অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশন করেন প্রমা অবন্তি ও তঁার দল l প্রথম আলো

কাগজ–কলমে বর্ষা ঋতু শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু প্রকৃতিতে বর্ষা এখনো বিরাজমান। শেষ হয়নি নগরীতে বর্ষার অনুষ্ঠান আয়োজনেরও। বৃষ্টি আর সংগীতের সুর মিলেমিশে বর্ষার বন্দনায় সংস্কৃতি অঙ্গনের নানামাত্রিক আয়োজন নাগরিক চিত্তবিনোদনেও বৈচিত্র্যের আস্বাদ নিয়ে এসেছে। ১৪ সেপ্টেম্বর এরই ধারাবাহিকতায় নগরের জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মুক্তমঞ্চে হয়ে গেল পঞ্চকবির গান নিয়ে বিশেষ আয়োজন।
‘পঞ্চকবির বর্ষার গান’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, চট্টগ্রাম শাখা। অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিল ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন। এতে চট্টগ্রামের শিল্পীদের পাশাপাশি আসর মাতান আমন্ত্রিত শিল্পী বুলবুল ইসলাম ও শারমিন সাথী ইসলাম।
অনুষ্ঠানে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার শিল্পীরা একক, দ্বৈত ও সমবেতকণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন ও অতুলপ্রসাদ সেন বর্ষার গান গেয়ে শোনান। মাঝে মাঝে ছিল তাঁদের গাওয়া গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা। সঙ্গে ছিল বর্ষার কথামালার আয়োজন।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সভাপতি ড. অনুপম সেন। এরপর বক্তব্য দেন চট্টগ্রামে ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার।
কথামালা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আনন্দ আয়োজন। শুরুতেই ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকৃতি পর্যায়ের বর্ষার গানের পরিবেশনা। ‘আজি বারি ঝরে ঝর ঝর ভরা বাদরে’ শিরোনামের গান সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন শিল্পীরা। এরপর দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘যখন সঘন গগন গরজে বরিষে কড়কা ধারা’ শিরোনামের সমবেত সংগীতের পরিবেশনা মুগ্ধ করে দর্শককে। একক কণ্ঠে সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশিত দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘বরষা আইল ওই ঘন ঘোর মেঘে’, অতুল প্রসাদের ‘বঁধু এমন বাদলে তুমি’, ‘মেঘেরা দল বেঁধে যায়’, ‘বঁধুয়া নিদ নাহি আঁখি পাতে’, রজনীকান্তের ‘প্লাবিত গিরিরাজ-নগর’, নজরুলের ‘অম্বরে মৃদঙ্গ বাজে’ গানগুলো ভালো লেগেছে দর্শকদের। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন কাবেরী সেনগুপ্তা ও শ্রেয়সী রায়।
এরপর কাবেরী সেনগুপ্তা, মোস্তফা কামাল, প্রদীপ দাশ, শ্রেয়সী রায় ও শ্যামলী পাল পঞ্চকবির বর্ষার গান পরিবেশন করে মাতিয়ে রাখেন দর্শকদের। তাঁদের পরিবেশনার পর মঞ্চে নাচ পরিবেশন করেন প্রমা অবন্তী ও তাঁর দল। সবশেষে মঞ্চ মাতাতে আসেন আমন্ত্রিত শিল্পী বুলবুল ইসলাম ও শারমিন সাথী ইসলাম। তাঁরা কখনো একক, কখনো–বা দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’, ‘আমি তখন ছিলেম মগন ঘুমের ঘোরে’, ‘কৃষ্ণকলি আমি তারে বলি’, ‘অঝোর ধারায় বর্ষা ঝরে’, ‘শাওন আসিল ফিরে’, ‘এলা কৃষ্ণ রাঙাইয়া তমাল বন’সহ পঞ্চকবির বিভিন্ন গান। অনুষ্ঠানে তবলায় লিটন মিত্র, কি-বোর্ডে নিখিলেশ বড়ুয়া, বেহালায় শ্যামল দাশ ও মন্দিরায় ফারুক হোসেন শিল্পীদের সহযোগিতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অনুপ সাহা ও দুলাল দাশ গুপ্ত।