পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে পাহাড়ি-বাঙালি বাসিন্দাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাড়ানোর বিকল্প নেই। পাশাপাশি পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাতও বন্ধ করতে হবে।
রাঙামাটিতে ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিএইচটি পিসমেকার অ্যালায়েন্সের একটি মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই আহ্বান জানান। ‘বাড়াই একতা-গড়ি সমতা’ স্লোগানকে সামনে রেখে স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সহায়তা করে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। সভায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও কমিউনিটি নেতারা অংশ নেন।
পিসমেকার অ্যালায়েন্সের নির্বাহী সদস্য নারীনেত্রী টুকু তালুকদারের সঞ্চালনায় সভার শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পার্বত্য চুক্তির ১৭ বছর পরও পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যাশা অনুযায়ী কোনো গোষ্ঠীই নিরাপদে বসবাস করতে পারছে না। পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বিশ্বাস হারিয়ে গেছে এবং আস্থার অভাব তৈরি হয়েছে। তাই সহিংসতামুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তির পক্ষে প্রচারণার লক্ষ্যে তিন পার্বত্য জেলায় সব সম্প্রদায়ের শান্তিকামী নারী–পুরুষের সমন্বয়ে সিএইচটি পিসমেকার অ্যালায়েন্স গঠন করা হয়েছে। অ্যালায়েন্সের সদস্যরা সব ধরনের সহিংসতা ও সংঘাতের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে কাজ করে যাবে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল পিসমেকার অ্যালায়েন্সের সদস্যদের বক্তব্যের সঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, দুষ্টু লোকেরাই সুখে নেই। চুক্তির সঙ্গে চাঁদাবাজিরও সম্পর্ক নেই। সব কিছুতে চুক্তি নিয়ে আসা ঠিক নয়।
পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা বাড়ানো গেলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা থাকবে না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, পার্বত্য চুক্তি নিয়ে বারবার অপপ্রচার হচ্ছে। এখানে কিছু অদৃশ্য শক্তির হাত রয়েছে। পার্বত্য চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে এবং পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোকে নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হলে বাঙালিদেরও এক–তৃতীয়াংশ প্রতিনিধি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি বাঙালি ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত গড়ে তুলতে পারলে সংঘাত অবশ্যই বন্ধ করা সম্ভব। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিরূপা দেওয়ান বলেন, পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবাইকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। নতুন প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলতে হবে।