প্রতিদিন একটি আপেল

ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, ‘অ্যান অ্যাপল আ ডে কিপস দ্য ডক্টর অ্যাওয়ে’। অর্থাৎ প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে আপনার আর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। আপেলে আছে প্রচুর পুষ্টি, সে তথ্য আমরা অনুমান করতে পারি। কিন্তু সে তো সব ফলেই থাকে। আপেল নিয়েই কেন এমন একটা প্রবাদের জন্ম হলো। কেন কলা, পেঁপে, কমলা কিংবা অন্য কোনো ফল নয়?
এই প্রবাদ প্রথম ছাপা হয়েছিল ১৮৬৬ সালে, ‘নোটস অ্যান্ড কোয়ারিজ’ নামে যুক্তরাজ্যের একটি জার্নালে। পরে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবাদটি স্রেফ কথার কথা নয়। ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে অল্প বয়সে মৃত্যুর আশঙ্কা কমপক্ষে শতকরা ৩৫ ভাগ হ্রাস পায়।
শরীরের কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো গুণাগুণ আপেলের মধ্যে আছে। আপেল ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এই ফলটা দাঁতের জন্যও ভালো। আপেল প্রাকৃতিক ‘টুথব্রাশ’ হিসেবেও দারুণ কাজ করে। মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে এটা দারুণ কার্যকর। প্রতিদিন একটি আপেল খেলে দাঁতের ক্ষয় হ্রাস পায়।
প্রবাদটি তৈরি হওয়ার পেছনে আরও কিছু কারণ গবেষকেরা খুঁজে পেয়েছন। প্রাচীনকাল থেকেই এই ফল সহজলভ্য। সহজে খাওয়া যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর ফলনও হয় ভালো। তাই প্রাচীনকাল থেকেই চিকিৎসকেরা আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
অবশ্য আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রভাব এড়ানো যায় না। সে ক্ষেত্রে আপেল কেনার পর বেশ কিছুক্ষণ পানিতে ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এতে রাসায়নিকের প্রভাব কমবে।
তবে প্রতিদিন একটি আপেল খেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না, এটা বোধ হয় একটু বাড়িয়েই বলা। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শুধু আপেলের ওপর ভরসা করলে তো চলবে না। অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারও খেতে হবে। গবেষকেরা বলেন, প্রতিদিন আপনার খাদ্যতালিকায় ৩: ৪ অনুপাতে ফল ও সবজি রাখুন। অর্থাৎ তিনটি ভিন্ন ভিন্ন রঙের ফল আর চারটি ভিন্ন ভিন্ন রঙের সবজি খান। এতে আপনার শরীরে পুষ্টিকর উপাদানের চাহিদা মিটবে।