প্রযুক্তিগুলো যদি না থাকত

হঠাৎ করে যদি দুনিয়াটা প্রযুক্তিবিহীন হয়ে পড়ে, তখন কী হবে? নিত্যদিনের ব্যবহৃত প্রযুক্তির জায়গায় নিশ্চয়ই বিকল্প কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করব আমরা। কেমন হবে সেই বিকল্প ব্যবস্থা?

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

ক্যান্ডিক্র্যাশ গেমসের বিকল্প
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র: সস্তা দামের অনেকগুলো ক্যান্ডি ও হাতুড়ি
ব্যবহার: প্রথমে বন্ধুদের মধ্যে সমানসংখ্যক ক্যান্ডি ভাগাভাগি করে নিতে হতো। তারপর হাতুড়ি দিয়ে যে যত তাড়াতাড়ি সব ক্যান্ডি ভাঙতে পারত, সে–ই হতো বিজয়ী।
এই যে সিস, আমার তো লাইফ শেষ। নেক্সট লেভেলে যেতে পারছি না! আপনি একটু হেল্প করেন না, প্লিজ!
সরি, আফা! ইট ভাঙতে ভাঙতে আমার লাইফও শ্যাষ!

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

ইউটিউবের বিকল্প
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র: বিশালকায় কাঠের বাক্স, অভিনয় ও কণ্ঠশিল্পী এবং ব্যান্ড পার্টি
ব্যবহার: এই ইউটিউবে দিনের নির্দিষ্ট সময় গানবাজনা ও অভিনয় দেখা যেত। শিল্পীরা থাকতেন বাক্সের ভেতর। দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী তাঁরা গান গাইতেন, অভিনয় করতেন। চাইলে ডাউনলোড করে বাসায় নিয়ে গিয়েও তাঁদের গান ও অভিনয় উপভোগ করার ব্যবস্থা থাকত।
সমস্যা কী, শিল্পী নীরব ক্যান?
বাফারিং চলতাছে, ঝিম মাইরা বইসা থাকেন।

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

চ্যাটিংয়ের বিকল্প
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র: খাতা, কলম, খাম ও পায়রা
ব্যবহার: চ্যাটিংয়ে আসক্তরা সব সময় সঙ্গে রাখতেন একটি খাতা ও কলম। মনের কথাগুলো লিখেই খামে ভরে বেঁধে দিতেন পায়রার পায়ে। পায়রা উড়ে যেত নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
আব্বা, আপনি আমার ইনবক্সে হাত দিতে পারেন না! এটা সাইবার ক্রাইম!কত্তদিন কবুতরের মাংস খাই না! আজকে সাইবার ক্রাইমের পাশাপাশি ফুড ক্রাইমও হবে!

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

সেলফির বিকল্প
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র: আলকাতরা, শক্ত কাগজ ও দেয়াল
ব্যবহার: মুখে আলকাতরা মেখে কাঁচা থাকতে থাকতে মুখের ছাপ নেওয়া হতো শক্ত কাগজে। পরে মুখের ছাপটি একটু শুকিয়ে এলেই টাঙিয়ে দেওয়া হতো দেয়ালে।
সেলফি তুলতে তুলতে চেহারার কী হাল হয়েছে, খেয়াল আছে?
শোনো মা, সৌন্দর্য গায়ের রঙে নয়। ফ্রেশ মানেই সুন্দর।

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

ফেসবুকের বিকল্প
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:
ব্ল্যাকবোর্ড বা স্লেট, চক ও ডাস্টার
ব্যবহার: ব্ল্যাকবোর্ড বা স্লেটে মনের কথা অর্থাৎ স্ট্যাটাস লিখে লোকজন সেটি প্রদর্শনের জন্য রেখে দিত পাবলিক প্লেসে। ফলোয়াররা স্ট্যাটাসটি দেখে লাইক, কমেন্টও দিতে পারতেন নিচের দিকে। মনে নতুন স্ট্যাটাসের আবির্ভাব হলে মুছে ফেলতে হতো পুরোনো স্ট্যাটাস।
ভাই, লাইক আর ভালোবাসা—দুইটাই দিলাম। এবার পকেটে যা যা আছে সব দিয়া দেন।
আপনাকে আমি ব্লক মারলাম!
ব্লক মাইরা লাভ নাই, আমার আছে একাধিক আইডি!

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

মুঠোফোনের বিকল্প
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র: লম্বা হোসপাইপ
ব্যবহার: মুঠোফোনের বিকল্প এই যোগাযোগমাধ্যমে কেবল একটি এফএনএফ নম্বরের সুবিধা পাওয়া যেত। কারণ, হোসপাইপের দুই প্রান্তের দুজনই এতে কথা বলতে পারতেন। চাইলে এর সঙ্গে আরও কয়েকটি পাইপ যুক্ত করে নেওয়া যেত। তবে সে ক্ষেত্রে একান্ত ব্যক্তিগত কথাবার্তার সুযোগ থাকত না।
অ্যাই শোনো, বিয়ের পর তুমি একটা গরু কিনে দেবে আমাকে! কিউট একটা গরু।
কী বললা, বিয়ের পর আমি একটা গরু হব? দ্য কাউ?