ফেনীতে শহীদুল জহিরের উপন্যাস অবলম্বনে নাটক মঞ্চস্থ

আবদুল মজিদ একদিন ঢাকার নবাবপুর রোডে হাঁটতে হাঁটতে অনেকগুলো কাকের ডাক এবং মাইকে বক্তৃতার শব্দ শুনে থমকে দাঁড়ান। একটু এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান, আবুল খায়ের নামের একজন নেতা বক্তৃতা করছেন। আবুল খায়েরকে দেখে মজিদের মনে পড়ে যায় ১৯৭১ সালের কথা। মজিদের মনে পড়ে, এই আবুল খায়েরই এলাকার বদু মাওলানার ছেলে, যে তাঁর বোনের ঘাতক।
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহিরের উপন্যাস জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা অবলম্বনে রচিত বিধ্বস্ত অমরাবতী নাটকের শুরুটা এমন। ১৬ মে সন্ধ্যায় ফেনী শিল্পকলা একাডেমী মঞ্চে আনে এই নাটক। নাট্যরূপ দেন এস এম টি কামরান হাসান ও নির্দেশনা দেন রাশেদ মাযাহার।
কীভাবে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের দোসরেরা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে এই নাটকে।
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র আবদুল মজিদকে তাড়া করে ফেরে একাত্তরের স্মৃতি। মজিদের মনে পড়ে যায়, বদু মাওলানার কথা, যিনি বাড়ির ছাদে মানুষের কাটা মাংস কাকের দিকে ছুড়ে দিতেন। এই লোকই মজিদের বোন মোমেনাকে হত্যা করেছিলেন। বোনের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মজিদ তাঁর মেয়ের নাম রাখেন মোমেনা। বদুর ছেলে আবুল খায়েরকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেতে দেখে তিনি মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত হন। মেয়ের সম্ভ্রম বাঁচাতে এলাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং পরদিনই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন। মজিদের মনে প্রশ্ন জাগে, এত অল্প সময়ে মানুষ পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরের অত্যাচার কীভাবে ভুলে গেছে?
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন কাকলী দে, লিমন, তৌহিদ, সৈকত, মেহেদী হাসান, অরূপ নাথ, মাসুদা আক্তার মৌ, রাজন, মো. মেহেদী হাসান, শাহেদ চৌধুরী, স্বপ্নীল, শাহরিয়ার সোহেল, আবু সাঈদ সকিব, রাসেল, ইফতেখারুল চৌধুরী, ফজলুল হক, সাজ্জাদুল দোলন ও মাকসুদুল সুজন। আবহসংগীতে ছিলেন গোপাল দাস, অরূপ রতন নাথ ও শীলা দাস।