ফেসিয়ালের শুরু আর শেষ

ফেসিয়ালের উপকারিতা, অপকারিতা দুটো দিকই আছে

ফেসিয়াল ত্বক পরিষ্কারে সহায়তা করেছবি: নকশা

ত্বকের পরিচ্ছন্নতা ও সজীবতা ফিরিয়ে আনতে অনেকেই মাসে একবার ফেসিয়াল করান। এ কাজের মাধ্যমে নতুন কোষ জন্মায় ত্বকে। ফেসিয়ালে গায়ের রং উজ্জ্বল হয়ে যাবে, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। বরং ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করানোটাই এর মূল উদ্দেশ্য। সকালে ও রাতে ভালোমতো মুখমণ্ডল ধুলে ময়লা দূর হয় অনেকটাই। মুখের পরিচর্যা নিয়মিত করলে পরবর্তী সময়ে বা বয়স বাড়লে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। তবে বাড়িতে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করলেও অনেক সময় ভেতরের ময়লা একদম ভেতর থেকে বের হয় না। এ কারণে দরকার হয় পেশাগত ফেসিয়ালের।

বয়স অনুযায়ী ফেসিয়াল

১৫ বছর থেকেই শুরু করা যেতে পারে ফেসিয়াল
ছবি: নকশা

২৫-৩০ বছরের আগে ফেসিয়াল করা ঠিক না, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ফেসিয়াল আমাদের ত্বককে পরিষ্কার ও টান টান রাখে। তাই নিয়মিত ফেসিয়াল করলে বয়সজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে ত্বক পরিষ্কার রাখতে কম বয়স থেকেও ফেসিয়াল করানো যায়। কিন্তু ট্রিটমেন্ট আছে, এমন ফেসিয়ালগুলো একটু বয়স হলেই করানো ভালো।

রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান এ বিষয়ে একবার বলেছিলেন, কিশোরী ত্বকে ময়লা জমে। ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। তখন ডিপ ক্লিন ফেসিয়াল করা যেতে পারে। ১৫ বছর থেকেই এটা শুরু করা যেতে পারে। এতে ভেতরের ময়লা চলে আসে। ক্রিমের সাহায্যে মালিশ করা হয়। এরপর স্ক্রাব ব্যবহার করা হয়। প্রথম দিকে ভারী কোনো ফেসিয়াল না করাই ভালো। ফেসিয়াল করানোর সময় কোনো যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা যাবে না। মাসে একবার ফেসিয়ালই যথেষ্ট। ট্রিটমেন্ট ফেসিয়ালগুলো ত্বক বুঝে ব্যবহার করতে হবে। একেকটি ফেসিয়াল একেকটি সমস্যা সমাধানের জন্য। ত্বকে ব্রণ হলে ১৫ দিন পরপর ফেসিয়াল করা যেতে পারে। রূপবিশেষজ্ঞ শারমীন কচি জানান, ২০ বছরের আগে ভারী বা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, এমন ফেসিয়াল না করানোই ভালো।

ত্বকের ধরন বুঝে ফেসিয়াল

ত্বক বুঝে বেছে নিন উপকরণ
ছবি: নকশা

ফেসিয়াল করার ধাপ বেশ কয়েকটা—পরিষ্কার করা, ময়েশ্চারাইজার মাখা, স্ক্রাব ব্যবহার, প্যাক লাগানো। শুষ্ক ত্বকের জন্য ফেসিয়ালের উপাদানগুলোর মধ্যে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার থাকা জরুরি। স্ক্রাবার যেন ক্রিমভিত্তিক হয়। শুষ্ক ত্বক অনেক সময় স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। সেখানে দুধ কিংবা দুধের সর ব্যবহার করা যেতে পারে। এমন ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা ফেসিয়াল করা যাবে। অন্যদিকে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হয়। এ ধরনের ত্বকে ক্রিম–জাতীয় উপাদান ব্যবহার না করাই ভালো। ক্রিম ত্বকের তেল ওঠাতে বাধা দেবে। স্বাভাবিক বা মিশ্র ত্বকের সমস্যা কম থাকে। যেকোনো ধরনের ফেসিয়াল এ ত্বকে মানিয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তবেই ফেসিয়াল করার কাজটি শুরু করুন।

ফেসিয়ালের উপকারিতা

ফেসিয়াল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে
ছবি: নকশা

ব্রণ ও দাগ কমাতে সহায়তা করে

বলিরেখা কমায়

রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে

ব্ল্যাকহেডস দূর করে

ফেসিয়াল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে

ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে

ফেসিয়ালের অপকারিতা

ফেসিয়াল করার সময় যদি দেখেন, খুব জোরে চাপ দিয়ে ত্বকের ওপর মালিশ করা হচ্ছে, তাহলে তা বন্ধ করতে বলুন। এ ছাড়া ব্ল্যাকহেডস ওঠানোর সময় যেই ব্রণস্টিকটি ব্যবহার করা হয়, সেটি শতভাগ জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। অনেকের ব্রণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা যেতে পারে। ক্রিমের ভারী প্রলেপ দিয়ে মালিশ করার কারণে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের ত্বকসংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। সংবেদনশীল ত্বক হলে অ্যালার্জি বা র‌্যাশ হতে পারে। এমনটাই জানালেন শারমীন কচি। ফেসিয়াল করার পর, ত্বকে স্ক্রাবিং করা যাবে না। ওয়াক্সিং ও থ্রেডিং না করলেই ভালো। অন্তত ২৪ ঘণ্টা ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যাবে না।